হোম অর্থ ও বাণিজ্য অসহনীয় গরমে এসি বিক্রি দ্বিগুণ

অসহনীয় গরমে এসি বিক্রি দ্বিগুণ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 13 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

সারা দেশেই চলছে দাবদাহ। অসহনীয় তাপমাত্রায় স্বস্তি পেতে সচ্ছল মানুষেরা ছুটছেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রক (এসি) যন্ত্র কিনতে। গরমের অসহ্য যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে অনেকে কিস্তিতেও এসি কিনছেন। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকদিনে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এসি বিক্রি। বেশিরভাগ এসিই যাচ্ছে বাসাবাড়িতে।

রোববার (২১ এপ্রিল) এসি আমদানিকারক, সংযোজনকারী, প্রস্তুতকারক এবং বেশ কিছু বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, রাজধানীতে গত কয়েকদিনে এসির বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, শনিবার (২০ এপ্রিল) দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সঙ্গে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সব জায়গায় ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। তাই সাধ্যের মধ্যে এসি কিনতে ক্রেতারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইলেকট্রনিকসের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে।

ইলেকট্রনিকস পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু ন্যাশনাল স্টেডিয়াম মার্কেট। এ মার্কেটে প্রায় দুই ডজন দোকান রয়েছে যারা এসি বিক্রি করেন। আছে সব আমদানি ও সংযোজনকারী কোম্পানিগুলোর শোরুমও। এছাড়া এখানকার বেশিরভাগ দোকানে নামকরা সব ব্র্যান্ডসহ নন ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায়।

চীনের তৈরি গ্রি ব্র্যান্ডের এসির বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ইলেক্ট্রো মার্টের রিটেইল সেলসের ইনচার্জ মোহাম্মদ মামুন মিয়া বলেন, এসির বাজারে গ্রির চাহিদা সবসময়ই বেশি। তবে দাবদাহের কারণে গত ১০ দিনে এসির বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হওয়ায় ইনভার্টার এসির চাহিদা বেশি। এখন আর ক্রেতারা নন ইনভার্টার কিনতে চান না। একটি গ্রির এক টনের নন ইনভার্টার এসি ৬৬ হাজার ৯৯০ এবং ইনভার্টার ৬৯ হাজার ৯৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসির পরিবেশক প্রতিষ্ঠান সরকার এন্টারপ্রাইজের শেয়ারহোল্ডার মো. রাজু বলেন, বিশেষ করে গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে এসির চাহিদা বেড়ে গেছে। সাধারণ সময়ে দিনে ৪ থেকে ৫টি বিক্রি হতো। এখন দেখা যাচ্ছে, কখনও এক ঘণ্টার মধ্যেই ৪ থেকে ৫টি বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। অনেকে দরদাম দেখে যাচ্ছে, পরবর্তী সময়ে এসে কিনে নেবেন বলেও কথা বলে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন শোরুমের বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসিতে দুই বছরের ওয়ারেন্টি থাকে বেশি। তবে কিছু কিছু ব্র্যান্ডে ৭ থেকে ১০ বছরের কমপ্রেসার ওয়ারেন্টিও থাকে। কেউ কেউ বিনামূল্যে এসি ইনস্টল করে দেয়। এবার মার্চের শেষের দিকে এসি বিক্রি শুরু হয়েছে। গরম বাড়ায় এপ্রিলের মাঝামাঝি এসে বিক্রি আরও বেড়েছে। যেহেতু এপ্রিলে বিক্রি ব্যাপকহারে বেড়েছে, মে মাসে এসি বিক্রি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা।

স্টেডিয়াম মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সবগুলো দোকানেই ক্রেতা উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে দেড় টন ও দুই টনের এসির চাহিদা ও বিক্রি বেশি। ব্র্যান্ড, কার্যক্ষমতা ও কোম্পানিভেদে এসব এসির দাম প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।

মালিবাগ থেকে এসি কিনতে আসা আফসার উদ্দিন বলেন, ‘বাসায় এসি ব্যবহার করব সেটা গত মাসেও আমাকে ভাবতে হয়নি। যে ভ্যাপসা গরম শুরু হয়েছে, রাতে ঘুমালে মনে হয় ফ্যানের বাতাস থেকেও আগুন বের হচ্ছে। বাসায় বৃদ্ধ মা কষ্ট পাচ্ছেন। তাই ভাবলাম কিস্তিতে হলেও একটা এসি কেনা জরুরি।’

আরেক ক্রেতা জেসমিন সুলতান বলেন, ‘যে গরম পড়েছে তাতে বাচ্চারা খুব অস্বস্তিতে রয়েছে। বাসায় আব্বা-আম্মাও অসুস্থ। তারা গরমে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। তাই এসি ছাড়া উপায় দেখছি না। পছন্দ আর দাম মিললে কিনব।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন