অনলাইন ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা এলাকায় ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে সোলেমান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছয় আসামিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। প্রাথমিকভাবে আসামিরা হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেনে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
অভিযুক্তরা হলেন- নজরুল ইসলাম, সাব্বির, তাকবির, জাকির, জসিম উদ্দিন ও সেলিম উদ্দিন।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, হত্যা মামলা তদন্তে নজরুল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসে। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জমি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই হুমকিধামকি দিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল নজরুলের দল। পূর্বশত্রুতার জেরেই দলটির নৃশংসতার বলি হতে হল সোলেমানকে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। বাকি আসামীদের ধরতে এখনো চেষ্টা চালাচ্ছে র্যাব।
২৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানার জয়শ্রী ইউনিয়নের অন্তর্গত শান্তিপুর এলাকায় ড্রেন পুনর্নির্মাণ করায় ইউপি সদস্য রাসেল ও তার লোকজনের ওপর নজরুল তার সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালায়। মূলত সাতারিয়া-পাথারিয়া হাওরের বোরো ধানের জমিতে পানি সেচের জন্য ড্রেনটি নির্মাণ করা হয়। নজরুল ও তার লোকজন খননযন্ত্র দিয়ে মাটি তুলে ড্রেনটি ধ্বংস করে দেয়।
২৬ ডিসেম্বর রাসেল মেম্বারের লোকজন তাদের স্বত্ব দখলীয় হাওরের বোরো জমিতে পানি সেচের জন্য ড্রেনটি পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে নজরুলের নেতৃত্বে সাব্বির, তাকবির, জাকির, মিজান, নাঈম, জসিম উদ্দিন, সেলিম উদ্দিন, নয়ন, আক্কল এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮ ও ১০ জন দেশীয় অস্ত্র দা, রামদা, রড, রডের পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। হামলায় ভিকটিম সোলেমানসহ মোট ১০ জন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
ভিকটিম সোলেমানসহ মোট ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেলে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় ৯ জানুয়ারি সোলেমানের মৃত্যু হয়।
হামলার ঘটনায় ৩ জানুয়ারি সোলেমানের চাচাতো ভাই দীন ইসলাম বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। তবে সোলেমানের মৃত্যু হওয়ায় ১০ জানুয়ারি আদালতের মাধ্যমে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা সংযোজিত হয়ে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হয়।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ধর্মপাশায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করে। আসামিরা নিজ এলাকা ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যান।