হোম রাজনীতি গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে: ভিপি নুর

গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে: ভিপি নুর

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 16 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এবং ঢাবির সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ সারির আহত ছাত্র-জনতা’র উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, মাসিক ভাতা ও সুচিকিৎসার দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ইতিমধ্যে গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে। গণঅভ্যুত্থানের মালিক কে, কোন দলের কতজন মারা গেছেন, কোন দলের কি কন্ট্রিবিউশন, সেই প্রতিযোগিতা লেগেছে। যদিও এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। কারণ, এটা কোনো রাজনৈতিক দলীয় আন্দোলন ছিল না। এটা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা গণআন্দোলন ছিল। এই গণঅভ্যুত্থানে সবাই অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই এখানে কাউকে জামায়াত শিবির, বিএনপি, গণঅধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা, ইতিহাসের সামনের দিকে এটা ভালো কিছু হবে না।

সাবেক ভিপি নুরুল বলেন, এখনো কেউ টের পাচ্ছেন না। কেউ দল গঠন নিয়ে ব্যস্ত, আবার কেউ ধান্দা নিয়ে ব্যস্ত। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে আছেন। অথচ যে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করলাম, সেই গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে কোনো দলের আওয়াজ নেই। বরং সবাই তাদেরকে রাজনৈতিক স্পেস দিতে চায়। আগামী নির্বাচনে সুযোগ দিতে চায়।

নুরুল হক বলেন, বিএনপির বিকল্প যদি শক্তিশালী কোনো রাজনৈতিক দল গড়ে না ওঠে, আবারও আওয়ামী লীগের আসার সুযোগ থাকবে। আওয়ামী লীগকে কামব্যাক করানোর জন্য ভারত হাজার হাজার কোটি টাকা ইনভেস্ট করবে। কাজেই, আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আওয়ামী লীগকে এদেশে মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠতে দেয়া যাবে না।

সাবেক ভিপি নুরু বলেন, দেশকে ভালো রাখতে হলে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করতে হবে। আমাদের নিজের ভালোর জন্য এসরকারকে আরও কিছুদিন রাখতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সরকার ছোট ছোট কিছু জায়গায় তাৎক্ষণিক কিছু ভূমিকা নিবে। তড়িৎ একশন নিবে। সেটি কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আজকে সাড়ে পাঁচ মাসে কেনো আহতদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, যে তরুণদেরকে নিয়ে মানুষ গর্ব করে, অহংকার করে, আমাদের সেই ছাত্র তরুণরাই জুলাই ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে আছেন। কিন্তু, তাদের কাছে কেন আমলাতন্ত্রের জটিলতা থাকবে। তাদের অফিসে কেন লালফিতার দৌরাত্ম্য থাকবে।

সরকার এবং জুলাই ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্যে নুর বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিহতদের নিখুঁত তালিকা এবং আহতদের তালিকা করে; আহতদেরকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। নিহতদেরকে ১ কোটি টাকা করে দিতে হবে। এই সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ উচিত ছিল, আহতদের খুঁজে খুঁজে বের করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। এছাড়াও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সরকারের উচিত ছিল।

গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি বলেন, নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং নিহতদের সংখ্যা নিয়ে নানান মতানৈক্য হচ্ছে। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে ১৬শ’ এর অধিক নিহত হয়েছে, আবার কোথাও কোথাও বলা হয়েছে ৮শ’ এর অধিক। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের মতো হয়ে গেছে। কেউ কেউ বলছেন ৩০ লাখ শহীদ হয়েছে, আবার কেউ কেউ বলছেন ৩ লাখ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত শহীদদের তালিকা এই অভাগা জাতি করতে পারেনি। অথচ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চেতনার রাজনীতি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নামে ভারতীয় হেজিমনিতে এখানে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। কিন্তু, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা এই জাতি এখনো জানে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন