হোম খুলনাসাতক্ষীরা পাটকেলঘাটার ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলীর মেজর পদে পদোন্নতি

পাটকেলঘাটার ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলীর মেজর পদে পদোন্নতি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 32 ভিউজ

মোঃ শাহিনুর রহমান শাহিন:

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর -এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান, এনডিসি, পিএসসি এবং সুন্দরবন রেজিমেন্ট কমান্ডার লে: কর্ণেল মো. কামরুল ইসলাম, বিজিবি এম, পিএসসি সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৯টায় সদর দপ্তর সুন্দরবন রেজিমেন্ট, শিরোমনি খুলনায় ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলীকে মেজর পদের র‍্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।এসময় ডাইরেক্টর ট্রেনিং লে: কর্নেল মো. নাহিদুজ্জামান, বিজিবিএম, পিবিজিএম, মেজর ইশতিয়াক আহমেদ, মেজর পলাশ কুমার বিশ্বাস, লেফটেন্যান্ট রুম্মন বিন ইসলাম, এক্স বিএন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।মেজর মো. এছাহক আলী বর্তমানে, ২১ বিএনসিসি ব্যাটলিয়ন সুন্দরবন রেজিমেন্ট শিরোমনি খুলনার অধিনায়ক এবং আশাশুনি সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মেজর মো. এছাহক আলী ৩১ শে ডিসেম্বর ১৯৭০ সালে সাতক্ষীরা জেলাধীন তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা মো. রমজান আলী সরদার, মাতা মিসেস সমেত্তবান বিবি। পিতার মাতার স্নেহাশীর্বাদে পড়ালেখা শুরু এবং ক্রমাগত উন্নতির পথে এগিয়ে যান। তিনি ১৯৮৭ সালে এসএসসি প্রথম বিভাগ, ১৯৮৯ সালে এইচএসসি’তেও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ড হতে স্কলারশীপ পান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৯১ সালে দ্বিতীয় বিভাগে ডিগ্রী পাস করেন এবং ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীতে নবম স্থান অধিকার করে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন শিক্ষা ও চাকুরীতে বৈষম্য প্রতিরোধ সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুর রহমান বিশ্বাসের সহিত বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করার দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল (যার স্মারক নং- রাস/এসচিব/২/৯৮-১১৯১ তারিখ-২৬/১০/১৯৯৪)। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। সহধর্মিনীর নাম শারাবান তহুরা। এক পুত্র নাম মো. মোর্তজা তোরাব, দুই যমজ কন্যা ইশরাত আরা মিম ও ইফফাত আরা মম।

কর্মজীবনে তিনি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ১০ জুন ১৯৯৮ সালে যোগদান করে প্রথম কর্মজীবন শুরু হয়। ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা ও কর্মকে ভালবাসেন তাই বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর এ ২৫ মার্চ ১৯৯৯ সালে প্রফেসর আন্ডার অফিসার (পিইউও) হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী ভাটিয়ারী, চট্টগ্রাম থেকে প্রি- কমিশন ট্রেনিং ৬ এপ্রিল ২০০২ ইং থেকে ২০ জুন ২০০২ পর্যন্ত অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। ২০০৪ সালের ১৭ জুলাই সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন এবং লেফটেন্যান্ট হিসেবে পদোন্নতি পান ২৬ জুলাই ২০০৭। তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান ২৭ অক্টোবর ২০১৪। দীর্ঘদিন যাবৎ সুন্দরবন রেজিমেন্ট ০১ সুন্দরবন ব্যটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লাটুন সমূহ পরিদর্শনসহ তদারকি করছেন। তিনি বিএনসিসিতে নিযুক্তির পর থেকেই প্রতি বৎসর বার্ষিক প্রশিক্ষণ অনুশীলন, ব্যাটালিয়ন প্রশিক্ষণ অনুশীলন, ফায়ারিং প্রশিক্ষন অনুশীলন এ সহকারী অফিসার ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ, উপ অধিনায়ক এবং অধিনায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। শীতকালীন যৌথ প্রশিক্ষণ ২০০২ সালে অংশগ্রহণ করে ৫৫ ব্রিগেডের ডি ব্রিফিং এ মেজর জেনারেল আশফাকের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। এ্যাডভান্স লিডারশীপ কোর্স ২০১২ এ সদর দপ্তর বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর উত্তরা, ঢাকায় কোর্স সিনিয়র হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মহান জাতীয় স্বাধীনতা দিবস ও মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজে বহুবার অংশগ্রহণ করেছেন। ২০০২ সাল হতে সুন্দরবন রেজিমেন্টের একমাত্র প্যারেড কমান্ডার হিসেবে অদ্যাবধি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। শ্রেষ্ট পিইউও ২০০৩ সাল সুন্দরবন রেজিমেন্ট কর্তৃক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে সাতক্ষীরা জেলার শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে জেলা প্রশাসন, সাতক্ষীরা থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। এটা বিএসসিসির জন্য গৌরবের বিষয়। ২০১০ সাল থেকে সোর্ড নিয়ে প্যারেড করেন। কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ অনুশীলনে ২০২৩ এ Best shooter এবং রেজিমেন্ট ক্যাম্পিং ২০২৪ শে ৪.৫ গ্রুপিং করে Best shooter হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।

ইতিপূর্বে তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৬ এ উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে নির্ধারিত হন। ২০১৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধিত হয়েছেন। মহান বিজয় দিবস প্যারেড-২০১৭ এ বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) বাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মেজর মো. এছাহক আলী বিএনসিসিতে নিবেদিত হয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং ক্যাডেটদের বিশেষ অবদান রাখার জন্য “এক্স ক্যাডেট পদক-২০২৪” অর্জন করেন।
মেজর প্রফেসর মোঃ বজলুল করিম (অবঃ) সম্পদনায় “বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বির্বতনের ধারায়” বইটি সহযোগি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ও সংগঠনের সাথে নিজেক সম্পৃক্ত রেখে সমাজে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি সবার কাছে তারজন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি যেনো এভাবে বাকি জীবনগুলো দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারেন এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন