ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
কেশবপুরে ৯৮ টি মন্ডপে দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ প্রায় শেষের পথে। এখন রং তুলির কাজ চলছে। আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার থেকে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, চলবে ৫ দিন ব্যাপী। আগামী ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সারদীয় দুর্গাোৎসব। প্রতিমা শিল্পীরা তাদের রং তুলির আঁচড়ে দেবী দৃর্গার প্রতিমাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মন্ডপ গুলোর বাইরে গেইট, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জার সকল কাজ চলিয়ে যাচ্ছেন প্যাণ্ডেল প্রস্তুত কর্মীরা।
নরম কাঁদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলে তিলে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দূর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে কেশবপুরে ৯৮টি প্রতিমা পূজা মন্ডপে। অনেক শিল্পীরা মাটি লেপনের কাজ শেষ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছেন।
পাঁজিয়া সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কর্মরত ভাস্কর সুকুমার পালের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রায় সব কয়টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে। তিনি আরও জনান, পাঁচ পুরুষ ধরে তারা প্রতিমা গড়ার কাজে নিয়োজিত আছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেশবপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় জানান, এবার উপজেলায় ৯৮ টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১নং ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে ১টি, ২নং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে ১৩টি, ৩নং মজিদপুর ইউনিয়নে ৬টি, ৪নং বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে ৬টি, ৫নং মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ৪টি, ৬নং সদর ইউনিয়নে ৭টি, ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৯টি, ৮মং সুফলাকাটি ইউনিয়নে ১১টি, ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে ১১টি, ১০নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ১১টি,১১নং হাসানপুরে ১০টি ও কেশবপুর পৌরসভায় ৯টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর এই উপজেলায় ৯৩ টি মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল। কেশবপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তালিকা অনুযায়ী গতবছরের তুলনায় এবার অতিরিক্ত ০৫ টি মন্দিরে প্রতিমা বেশি হয়েছে। সাগরদাঁড়ি ০১ টি, বিদ্যানন্দকাটি ০২ টি, সাতবাড়িয়া ০১ টি ও কেশবপুর পৌরসভায় ০১ টি মন্দিরে দূর্গা পূজা বেশি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেশবপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার সুকুমার সাহা জানান, সরকারী নীতিমালা মেনে পূজা মণ্ডপে পূজা হবে। এবিষয়ে গত ১ অক্টোবর রবিবার বিকেলে কেশবপুর থানা পুলিশের আয়োজনে থানা চত্বরে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও সকল পূজা মন্দির কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, প্রত্যেকটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, অশ্লীল ডিজে গান বাজনা থেকে বিরত থাকা, স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন, কেশবপুর শহরকেন্দ্রিক যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও উশৃঙ্খলা যাতে না হয় এবং মন্দিরের আশেপাশে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বন্ধে আলোচনা ও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরও জানান, দূর্গা পূজা উদযাপনে ৪ স্তরের সার্বিক নিরাপত্তা বলয় রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, আনসার-ভিডিপি ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর পাশাপাশি অধিক নিরাপত্তার জন্য মন্ডপের আশপাশে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া উপজেলা ব্যাপী পুলিশের ভ্রাম্যম্যান টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম,এম আরাফাত হোসেন বলেন, দুর্গোৎসব পালনের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। ৯৮ টি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পূজা চলাকালীন সময়ে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে।