হোম খুলনাবাগেরহাট মোংলায় কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীদের ২৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে

মোংলায় কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীদের ২৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 33 ভিউজ

মোংলা প্রতিনিধি :

মোংলায় কাঁচা বাজার সিন্ডিকেট চক্রের প্রায় ২৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে । এ চক্রের প্রধান শাহআলম তালুকদার ওরফে আলু আলম এ অর্থ লুটপাট করছেন বলে অভিযোগ ক্ষুদ্র কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের। তাদের সঞ্চয় লোপাটের সুরাহ না করে সমিতির নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করায় সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালে মোংলা পোর্ট পৌর শহরের কাঁচা বাজার ঘিরে গড়ে ওঠে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট চক্র। পরবর্তীতে অধিপত্য ধরে রাখতে এ চক্রে সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অর্ম্তভূক্ত করা হয়। একই সঙ্গে বাজারের সার্বিক নিয়ন্ত্রনে উপজেলা সমবায় কার্যলয় থেকে মোংলা পোট পৌরসভার কাঁচাবাজর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ নামে রেজিষ্টেশন নেয়া হয়। সভাপতি শাহআলম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, ক্যাশিয়াল এমাদুল হাজী সহ ছয় সদস্য বিশিষ্ট কর্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়।

রেজিষ্টেশনকৃত এ সমিতির আড়ালে সিন্ডিকেট চক্রের হাতে উর্ধমুখী বাজার মূল্যে জিম্মি হয়ে পড়ে পৌর শহরের প্রায় ৩০ হাজার ক্রেতা সাধারণ। একই সঙ্গে এ চক্রের বেড়জালে আটকে পড়ে বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৯০ জন। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দৈনিক ২০ টাকা হারে মাসে ৬শ’ টাকা সঞ্চয় জমা হয়ে থাকে।

মোংলা কাঁচাবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী বাদল মুন্সি জানান, বিগত সাড়ে ৩ বছরে প্রায় ৪৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা সদস্যদের সঞ্চয় জমা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত সদস্যদের আয় ও ব্যয়ের হিসেব না দিয়ে সমিতির সভাপতি শাহআলম তালুকদার ও ক্যাশিয়ার মোঃ এমাদুল হাজী নিজের মতো সব কিছু নিয়ন্ত্রন করছেন। সম্প্রতি সদস্যরা তাদের জমাকৃত সঞ্চয় ও আয়-ব্যয়ের হিসেব চাইলে মাত্র ৩৮ হাজার টাকা ক্যাশ আর ২১ লাখ টাকা অনাদায়ী লোন দেখানো হয়। বাকী ২৩ লাখ টাকার কোন হদিস নেই। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠলে তড়িগড়ি নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। পরবর্তী নির্বাচনে বিজয়ী হতে বহিরাগতদের সদস্য অন্তভুক্ত করে গত ৭ মার্চ নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন তারা।

এবিষয়ে ক্ষুদ্র কাঁচাবাজর ব্যবসায়ীরা জমাকৃত সঞ্চয় ও আয়-ব্যায় সহ বহিরাগতদের ভোটা ইস্যুতে আপত্তি জানালে সমবায় অধিদপ্তর থেকে নির্বাচনী তফসিল স্থগিত করা হয়। তবে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে আগামী ২১ এপ্রিল নির্বাচনী তফসিলের চক্রান্ত করা হয়েছে। কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী মহিদুল শিকদার বাবু ও শাহজাহান ব্যাপারী অভিযোগ করে বলেন, সদস্যদের জমাকৃত সঞ্চয়ের (আয়-ব্যায়) হিসাব না দিয়ে সাজানো নির্বাচন হলে ওই সিন্ডিকেট চক্রটি আবার নেতৃত্বে পৌঁছাবে। আর তখন ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা জমাকৃত সঞ্চায়ের পুরোটাই ওই চক্রের পকেটে জমা হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তারা।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোংলা কাঁচাবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি শাহ আলম ওরফে আলু আলম তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে ফোন কেটে দেন।

মোংলা কাঁচাবাজারের কথিত সিন্ডিকেট চক্র এবং সমিতির ভূয়া ভোটার তালিকার বিষয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পেয়েছেন স্বীকার করে মোংলা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ জুবায়ের হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোংলা বাজার নিয়ন্ত্রণ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘কাঁচাবাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আজই (সোমবার) বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনা হয়েছে। কোন সিন্ডিকেট চক্র কাঁচামালের দাম নিয়ে কারসাজি করতে পারবেনা। কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঠিক রাখতে মোংলা কাঁচাবাজারের সিন্ডিকেট চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ‘।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন