কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জে এক দিনে পৃথক হত্যাকাণ্ডে ৬ জন ও দুর্ঘটনায় ২ জন সহ মোট ৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ভৈরবে ৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে মারা গেছেন। করোনা মহামারীর মধ্যেও এ নিহতের হার জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। তাড়াইলে এক শিশু ও কুলিয়ারচরে একজন বিভাটেক চালক, সদরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রাজমিস্ত্রী এবং পাকুন্দিয়ায় অটো চাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে। ভৈরবে নিহত চারজনের মধ্যে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মোঃ ফারুক খান (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী এবং শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ও দুপুরে দুই দফা সংঘর্ষে শেখ মকবুল (৪০) ও শেখ পাবেল (২৮) নিহত হয়েছে।
এবং শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে শরীফ (১৪) নামে অটোচালক এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাড়াইলে রিফাত (১২) নামে এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে পাটক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া শনিবার (১৭ এপ্রিল) ভোরে কুলিয়ারচরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে লিটন মিয়া (৪৫) নামে এক বিভাটেক চালক নিহত হয়। এছাড়া শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে কিশোরগঞ্জ শহরে কাজ করতে যাওয়ার পথে রাস্তায় পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মোঃ বাচ্চু মিয়া (৬৫) নামে এক রাজমিস্ত্রী নিহত হয়। পাকুন্দিয়া বাড়ির সামনের রাস্তায় সবজি ভর্তি এক অটোরিকশার চাপায় রিয়া মণি (৬) নামে এক শিশু নিহত হয়। জানা যায়, আশুগঞ্জ থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর ভৈরব প্রান্তে পৌর এলাকার চন্ডিবের খান বাড়ির ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক খান ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।
এ সময় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাতে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর শনিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ভৈরব- কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কালিকাপ্রাসাদ গাজীরটেক এলাকা থেকে শরীফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শরীফ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে। সে ভৈরব পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো। ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামে শনিবার (১৭ এপ্রিল) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দফা সংর্ঘষে একই বংশের দুইজন নিহত হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এ সময় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুট করা হয়। সকাল ৯ টার দিকে লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ির সাথে লুন্দিয়া সিকদার বাড়ির মাজু মেম্বার গ্রুপের সংর্ঘষ হয়। এতে নিহত হয় মৃত শেখ মোতালিব মিয়ার ছেলে শেখ মকবুল।
অপরদিকে বেলা ১২ টার দিকে লুন্দিয়া শেখ বাড়ির সাথে পাগলা বাড়ির সংর্ঘষ হয়। এতে নিহত হয় শেখ খালেক মিয়ার ছেলে শেখ পাবেল। গাছ থেকে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৭ এপ্রিল) ফজরের নামাজের পর কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের মধ্য লালপুর ও ভৈরব উপজেলার মিরারচর উত্তর পাড়া ওমরা বাড়ির দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে বিভাটেক চালক লিটন মিয়া নিহত হয়। এতে নিহতের বড় ছেলে মোঃ রাকিব (২০) সহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাতের খাবার খেয়ে বাইরে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের চরতালজাঙ্গা বাদুরতলা গ্রামের পাটক্ষেত থেকে শিশু রিফাতের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। রিফাত রাজমিস্ত্রী মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে।