হোম জাতীয় শেখ হাসিনার বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট করতে হবে: প্রেস সচিব

শেখ হাসিনার বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট করতে হবে: প্রেস সচিব

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 69 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শেখ হাসিনার বিষয়ে সবাইকে স্পষ্ট বলতে হবে। আমরা কী চাই? আজকেও দেখবেন সে বলছে ‘যারা জুলাইয়ের আন্দোলন করেছে সবাই টেরোরিস্ট’। কী ভয়াবহ!

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘জনতার ইশতেহার’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘সাইফুল ভাই (বাম নেতা) আন্দোলনে ছিলেন, তিনি টেরোরিস্ট। আমির খসরু ভাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আন্দোলনে ছিলেন, তাকে বলা হচ্ছে টেরোরিস্ট। আমরা যারা লেখালেখি করেছি, সবাই টেরোরিস্ট। ১৮ কোটি লোককে টেরোরিস্ট বলে তিনি (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছেন। টেরোরিস্ট শব্দটা বলা সহজ, কিন্তু যখন কাউকে টেরোরিস্ট বলছেন তাকে হত্যার যোগ্য করছেন। মানে তিনি চান ১৮ কোটি মানুষকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসবেন। এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর শক্ত একটা অবস্থান নিতে হবে। কেননা এটা আমাদের জন্য অস্তিত্বের ওপর হুমকি।’

নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেকে বলছেন, জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। এই বিতর্কগুলো পুরো পৃথিবীতে অনেক জায়গায় ১০-১৫ বছর ধরেও চলে। এটা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নাই। সবাই যদি একমত হতো তাহলে দেশে বাকশাল হতো না। দ্বিমত থাকবেই, এর ভিত্তিতে ঐকমত্যে গিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হবে। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। এটা খুব দ্রুতই হবে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হলো, নির্বাচন নিয়ে কোনও ধরনের অনিশ্চয়তার বিষয় যেন না থাকে। আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। কিছু কিছু থিংকট্যাংক বলতে চাচ্ছেন, এটা নিয়ে কৃষকের সঙ্গে, নারীদের সঙ্গে বা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়নি। যারা রাজনৈতিক দল, যাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ঐকমত্য কমিশন কথা বললো– রাজনৈতিক দলগুলো কী এই গ্রুপগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে না? তাদের কী নারী উইং, শ্রমিক উইং নাই? থিংকট্যাংকগুলো নিজেরা নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য এসব মুখরোচক কথা বলেন। জুলাই সনদে সবকিছুই এসেছে। যেসব শাসনতান্ত্রিক বিষয় পত্রিকায় এসেছে আপনারা দেখছেন, কিন্তু অন্যান্য বিষয় সবই এসেছে। যদি ভাবেন আমরা ৯ মাসে সব ঠিক করে ফেলবো, সেটা হয় না।’

নির্বাচনের পর নতুন করে সংলাপ হতে পারে মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, ‘নেপালে দেখেন, তাদের বিপ্লবপরবর্তী সংবিধান করতে ৯ বছর লেগে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ একটা আরও উন্নত শাসনতন্ত্র চায়, একটা ভালো শাসনব্যবস্থা চায়, এখানে জবাবদিহি থাকবে, দুর্নীতি থাকবে না। সেটাকে একদিনে সংলাপ করে আমরা পাবো না। এটা একটা অভূতপূর্ব সংলাপ হয়েছে, আমাদের রাজনৈতিকদলগুলো সুচিন্তিত মতামত দিয়েছে, চার হাজার পাতা এটা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, এই আলাপ একদিনে কেন সম্ভব না, আসলেই সম্ভব না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ দেশে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আমাদের চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জুলাই যে আন্দোলন সেটা প্রথম শুরু হলো কর্মসংস্থান নিয়ে। লাখ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। এমন সময় সেটা করতে হবে যেখানে আগ্রাসী কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা আসছে আপনার চাকরি কেড়ে নেওয়ার জন্য।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘লজিস্টিক আর অবকাঠামো নিয়ে আগামী সরকারের চ্যালেঞ্জ আছে। আমাদের প্রবৃদ্ধির জন্য এই অবকাঠামো দিয়ে টিকতে পারবো? আমরা ভুল জায়গায়… গোপালগঞ্জ কাশিয়ানি রেললাইন বানিয়ে রেখেছি। কেউ চড়ে না। পাবনা থেকে একটা রেল লাইন করা হয়েছে কেউ চড়ে না। যেখানে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হাই স্পিড রেললাইন করা দরকার বা একটা এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ে দরকার, সেটা আমরা করেছি ঢাকা থেকে খুলনা। এটা কি গ্রোথ এরিয়া? এটা করা হয়েছে, যাতে গোপালগঞ্জকে স্পর্শ করে যাওয়া যায়। ৫ বিলিয়ন ডলার এবং তার পক্ষের সাংবাদিকরা সে সময় প্রশংসা করেছেন– দক্ষিণ বাংলাদেশ গ্রোথে ভরে যাবে, কই কিছু হয়েছে? কয়টা কারখানা গিয়েছে সেখানে? আমরা সারা জীবন দেখছি, গ্রোথ করিডোর ঢাকা-চট্টগ্রাম। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটা গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, পাঁচ বছর পর ১০ কিলোমিটারও দিতে পারবে না। গ্রোথ এই এলাকায়, গ্রোথ তো গোপালগঞ্জে না।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, এমন একটা রাজনৈতিক সমঝোতা করা যাতে সে ডানপন্থি হোক বা বামপন্থি, সে যেন গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল থাকে। এটাকে নিশ্চিত করা। না হলে দেশের বাইরে সঠিক বার্তা যাবে না। সঠিক বার্তা না গেলে এখানে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে না। আর এফডিআই না হলে কর্মসংস্থান বাড়বে না।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন