হোম অন্যান্যসারাদেশ ইবি থানা স্থানান্তরের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

ইবি থানা স্থানান্তরের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 15 ভিউজ
ইবি সংবাদদাতা:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে অবস্থিত ইবি থানা স্থানান্তর না করার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত ও এর অঙ্গসংগঠ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।
আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গড়াই পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা। পরে দুপুর দুইটায় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি এতে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন থেকে সরে আসেন। এসময় তারা আগামী দুই দিনের মধ্যে থানা স্থাপন ও স্থানান্তরের যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দেওয়ার দাবি জানান।
আন্দোলনকারীরা জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং পার্শ্ববর্তী সাতটি ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মানুষের মতামত উপেক্ষা করে ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থান্বেষী কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি অসত্য তথ্য দিয়ে এই থানাকে সরিয়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে দুর্গম ঝাউদিয়ায় নেয়ার অপচেষ্টা করেছে। ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর নিকার কমিটির সভায় ঝাউদিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা স্থানান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সম্মতিতে থানা স্থানান্তর করে এখানে পুলিশ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের মতামত না নিয়ে এমন অপচেষ্টা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও ক্যাম্পাসকে সুরক্ষিত রাখতে হলে ইবি থানাকে তার পূর্বাবস্থায় বহাল রাখার কোনো বিকল্প নেই। ইবি থানা ইবিতেই থাকবে, অন্য কোথাও এই থানা স্থানান্তর করা যাবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ইবি থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর কোনো মতামত নেয়নি। সকলের মতামত উপেক্ষা করেই ফ্যাসিস্ট সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা ইবি থানা অন্য কোথাও স্থানান্তরে ষড়যন্ত্র মেনে নিবো না। আমরা প্রয়োজনে আরো কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবো।
ইবি থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হাসান লাবু বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের গড়া গৌরবময় ইসলামী বিশ্ববিদালয়কে অস্থিতিশীল করতেই এখানে প্রতিষ্ঠিত দীর্ঘদিনের পুলিশী থানা সরিয়ে ফেলার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিল পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট সরকার। সরকার পতনের এক দিন আগে গত ৪ আগস্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সন্নিকটে দেখিয়ে ১৬ কিলোমিটার দূরের ঝাউদিয়াতে এ থানা স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মানুষের সম্মতি আছে বলেও অবৈধ সরকারের হাতে গোনা কিছু দোসর নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে মন্ত্রণালয়কে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দেয়। আমরা ইবি থানা অন্য কোথাও স্থানান্তরে ষড়যন্ত্র মেনে নিবো না। আগামী আট দিনের মধ্যে যদি ইবি থানা স্থানান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দেওয়া না হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবো।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, থানা স্থানান্তর নিয়ে একটি কমিটির কাজ চলমান রয়েছে। ওই কমিটির পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদন জমা হবে। তাতে দুই এলাকার মানুষের জন্য ভালো কিছু হবে বলে আশা করি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন