মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক এনামুল হোসেন তানভীরের বিরুদ্ধে এক যুবতীয় সঙ্গে ফেসবুকে প্রেম করে বিয়ের প্রলোভন ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী ওই যুবতী। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মাঝে হৈ চৈই পড়ে গেছে।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ওই যুবতী দাবী করেন, তার বাড়ি শেরপুর জেলার দালিতাবাড়ি উপজেলার সন্ন্যাসীভিটা গ্রামে। শিক্ষক এনামুলের সাথে ২০২২ সালের দিকে ফেসবুক ফ্রেন্ডের মাধ্যমে পরিচয় হয়। কিছুদিন ম্যাঞ্জারে কথা বলার পর এনামুল তাকে প্রেমের প্রস্তাব করে। প্রথমে ওই যুবতী এনামুলের প্রেমের প্রস্তাবে সম্মাতি না থাকলেও পরে রাজি হয়। এরপর বিভিন্ন সময় এনামুল ৬বার তার এলাকায় এসে বিভিন্নস্থানে ঘুরাঘুরি করে একান্তে সময় কাটায়। তখন তাকে বিয়ের কথা বললে সময় ও বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে আসছিল। এমনকি সম্পর্ক থাকা অবস্থায় এনামুল তার ছোট ভাই শাকিল আজমলসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরিচয়ের পর তার ছোটভাই শাকিল ভাবী সম্বধোন করে কয়েক মাস তার সাথে কথাও বলতেন। সম্পর্ক থাকা অবস্থায় এনামুল মাঝে মধ্যে টাকা ধার চায়তো, যার কারনে পরনের যাবতীয় গহনা বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। তার সাথে সম্পর্ক থাকাকালিন বিভিন্নস্থান থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসলেও এনামুল তাকে বিয়ে করতে দেয়নি। চলতি বছরের গত ২০ সেপ্টেম্বর এনামুল তার কথা দেয় ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তাকে বিয়ে করতে আসবে। সেই মোতাবেক বাড়িতে কেনাকাটা করাসহ আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেয়া হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর বিয়ের দিন সকালে এনামুল ফোন দিয়ে বলে আমরা সন্ধ্যায় মধ্যেই আসছি। এরপর থেকে এনামুল সকল যোগাযোগ বন্ধ দেয়। তারপর তার ছোট ভাই শাকিলের (বিশেষ বাহিনীতে চাকুরিরত) কাছে যোগাযোগ করলে ফোনে নানা রকম ক্ষতি ও মামলার ভয় দেখিয়ে বলে এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রশাসন দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষক এনামুল ইসলাম তানভীর প্রেমের কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলাম। পরে দেখলাম তার চেহরা ও পরিবার ভাল না। তবে তার কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়নি বা ক্ষতি করিনি।
তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, লোকমুখে বিষয়টি শুনেছি, তাছাড়া বিষয়টি পারিবারিক মনে করে গুরুত্ব দেয়নি বা আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ইউএনও অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার কর্মকার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেহেতু বিষয়টি নারী নির্যাতনের, বিধায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
উপজেলা মহিলা বিষযক কর্মকর্তা মৌসুমী আক্তার বলেন, সবেমাত্র গতকাল অভিযোগটি হাতে পেয়েছি, তদন্ত করতে দুপক্ষকে ডাকা হবে। তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।