রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর):
যশোরের মনিরামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছেন এক পাষন্ড স্বামী। এর কয়েক ঘন্টা পর স্বামী নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার শিকার ওই ব্যক্তির নাম উজির আলী গাজী (৫০)। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার নেহালপুর ঝাউতলা এলাকা থেকে পুলিশ তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে উজির আলী ঝাউতলা এলাকার ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী পারভিনা বেগমকে (৪৫) ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে দিয়ে পালিয়ে যান। গুরুত্বর আহত পারভিনা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উজির আলী গাজী নেহালপুর ইউনিয়নের বালিধা গ্রামের হাতেম আলি গাজীর ছেলে। পারভিনা বেগম একই গ্রামের দেন আলী গাজীর মেয়ে। পারভিনা বেগম উজির আলী গাজীর তৃতীয় স্ত্রী বলে জানা গেছে। বিভিন্ন এলাকায় উজির আলীর আরো দুইজন স্ত্রী বর্তমান আছেন। পেশায় ভ্যানচালক উজির আলী স্ত্রী পারভিনাকে নিয়ে তিন মাস ধরে নেহালপুরে ঝাউতলায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাব আলী বলেন, বুধবার রাত এগারোটার দিকে হঠাৎ ফোনে জানতে পারি এক নারীকে জবাই করে ফেলে রেখে তার স্বামী পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুল হান্নান ও এ এস আই শরিফুল ইসলামসহ আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এরপর রক্তাক্ত পারভিনা বেগমকে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ইউপি সদস্য সোহরাব আলী আরো বলেন, রাতেই ফাঁড়ির পুলিশ উজির আলীকে ধরতে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়না। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ভাড়া বাড়ির পাশে একটি সজনে গাছের সাথে উজির আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। স্থানীয়রা বলছেন উজির আলী ও তার স্ত্রী পারভিনা বেগমের মধ্যে টাকা পয়সা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে দ্ব›দ্ব চলছিল। বুধবার দিবাগত রাত এগারোটার দিকে তারা স্বামী-স্ত্রী ভাড়া বাড়িতে বসে কথা বলছিলেন একপর্যায় উজির আলী গাছি দা (ধারালো দা) দিয়ে স্ত্রীর গলায় কোপ বসিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। এরপর স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস বলেন, গৃহবধূর গলার কয়েকটা শিরা ও শ্বাসনালির কিছু অংশ কেটে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। নেহালপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আহত গৃহবধূ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পুলিশ আত্মহত্যার শিকার উজির আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।