হোম আন্তর্জাতিক আবারও অসংলগ্ন কথাবার্তা বাইডেনের

আবারও অসংলগ্ন কথাবার্তা বাইডেনের

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 111 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

তার অসংলগ্ন আচরণ বা কথাবর্তা নতুন নয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মাঝেমধ্যেই কথা বলতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলতে দেখা গেছে তাকে। এ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি মার্কিন মুলুকের শীর্ষস্থানীয় পদে বসার যোগ্য জো বাইডেন?

দুদিন আগেই বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাট এই রাজনীতিক চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘রাশিয়ার মাথা’ বলে বসার পর সেই বিতর্ক আরও জোরদার হয়। সেই বিতর্কের মধ্যেই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা অবশ্য বলেছেন, ৮০ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট তার ‘দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ফিট।’

কিন্তু বাস্তবতা তা বলছে না। আবারও অসংলগ্ন কথাবার্তা শোনা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মুখে। শুক্রবার (১ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান থেকে ত্রাণ সহায়তা ফেলার পরিকল্পার কথা জানান বাইডেন। কিন্তু গাজার কথা বলতে গিয়ে তিনি ইউক্রেন বলে ফেলেন।

বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। দায়িত্ব গ্রহণকালে তার বয়স ছিল ৭৭ বছর। এখন ৮১। এই বয়সেও আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আগামী নভেম্বরে যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তখন তার বয়স হবে ৮২।

গত জানুয়ারিতে এনবিসির এক জনমত জরিপে দাবি করা হয়, বাইডেনের বয়স নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তিন-চতুর্থাংশ ভোটারের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ে বারবার বাইডেনের ভুলে যাওয়া কিংবা এলোমেলো কথাবার্তার কারণেই এমন উদ্বেগ। তবে ট্রাম্পের বয়স ৭৭ হলেও তাকে নিয়ে কারও এই ধরনের উদ্বেগ নেই।

ইউক্রেনের নাগরিকদের ইরানি বলে অভিহিত করা কিংবা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ‘ভ্লাদিমির’ বলা অথবা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাকের নাম গুলিয়ে ফেলার মতো ঘটনা বাইডেনকে বারবার ঘটাতে দেখা গেছে। আর এ কারণেই স্বাভাবিকভাবেই অশীতিপর বাইডেনের শারীরিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অনেকের ধারণা, স্মৃতিভ্রংশের অসুখ ক্রমেই জাঁকিয়ে বসছে তার শরীরে।

নিজেকে ‘তরুণ’ মনে করেন বাইডেন

মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা নিয়ে এমন বিতর্কেই মধ্যেই গত বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাইডেনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, নিজেকে আগের চেয়ে আরও বেশি তরুণ মনে করেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বাইডেনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দিকে নজর ছিল অনেকের। কারণ একটাই, এবারের নির্বাচনে বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনামূলক প্রচার চালাচ্ছে বিরোধী শিবির। বিভিন্ন বিজ্ঞাপন ও নির্বাচনী সমাবেশে তাদের দাবি, বাইডেন মানসিকভাবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার উপযুক্ত নন।

এছাড়া সম্প্রতি বাইডেনের কিছু আচরণ তার মানসিক সুস্থতার এ প্রশ্নকে আরও বড় করে তুলেছে। শুধু বিরোধী শিবিরে নয়; বাইডেনের নিজ দলেও এ নিয়ে সমালোচনা চলছে।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মেরিল্যান্ডের একটি সামরিক হাসপাতালে বাইডেনের শারীরিক পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। পরীক্ষা শেষে হোয়াইট হাউসে ফিরে চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বাইডেন গণমাধ্যমকে জানান, দায়িত্ব পালনে তিনি পুরোপুরি ফিট।

বাইডেন বলেন, গেল বছরের বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যে ফলাফল এসেছিল, এবারও অনেকটা তা–ই আছে। খুব বেশি পরিবর্তন নেই। আমার স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি হয়নি এবং দুই দফায় করোনায় আক্রান্ত হয়েও বেশ সুস্থ আছি।

আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর রিপাবলিকান পার্টি থেকে বাইডেনের প্রতিপক্ষ হওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

মামলা, আদালতে ছোটাছুটির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে ট্রাম্প। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়া সবগুলো প্রাইমারি নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তিনি। সবশেষ মিশিগানে বিজয়ী হয়ে নিজের জয়ের ব্যাপারে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে বাইডেনকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

অপরদিকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে রিপাবলিকান পার্টির প্রাথমিক বাছাইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫২ বছর বয়সী নিকি হ্যালি বলেছেন, ৭৫ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাকে মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে। তার মতে, ৮১ বছর বয়সী বাইডেন ও ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প কেউই মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে যোগ্য নন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন