রাজনীতি ডেস্ক:
রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটি আসনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিন প্রার্থী মোটামুটি নির্ভার। এবারের ভোটের মাঠে তিনজনই হেভিওয়েট প্রার্থী।
এর মধ্যে রংপুর-৩ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের লড়ছেন লাঙ্গল মার্কা নিয়ে, রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং রংপুর-৬ আসনে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী লড়ছেন আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে। বিজয়ের জন্য এই তিন প্রার্থীকে খুব একটা টেনশন পোহাতে হবে না। এর মূল কারন এই তিন আসনে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিপক্ষ নেই।
রংপুর-৩ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন)
এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ফলে সমঝোতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই দলীয় প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডলকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখানে আওয়ামী লীগের কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। ফলে জিএম কাদেরের জয় অনেকটা নিশ্চিত বলেই মানেন তার দলের কর্মী-সমর্থকরা। ফুরফুরে মেজাজে থাকা জিএম কাদেরের সঙ্গে এই আসনটিতে ভোটযুদ্ধে লড়বেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানীসহ আরও পাঁচজন। রংপুর-৩ আসনে ভোটার ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯৭০ জন। এই আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য এরশাদপুত্র রাহগীর আল-মাহি সাদ। এবার তিনি ভোটযুদ্ধে মাঠে নেই।
রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া)
আওয়ামী লীগের প্রার্থী টিপু মুনশির (নৌকা প্রতীক) মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল। গত নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে মাত্র ৭ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। তবে গত নির্বাচনে টিপু মুনশির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এবার নির্বাচনে না আসায় তার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন ভোটারের এই আসনটিতে এবার প্রার্থী তিনজন। রংপুর-৪ আসনে চতুর্থবারের মতো প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন টিপু মুনশি। তিনি ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন।
রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ)
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় সংসদের স্পিকার বর্তমান সংসদ সদস্য ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর আলম মিয়া যাদু। তবে পীরগঞ্জে আওয়ামী লীগের আধিপত্যের কারণে ড. শিরিন শারমিন নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে আছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম লড়ছেন ট্রাক প্রতীকে। শিরীন শারমিন চৌধুরী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি পীরগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি রংপুর-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এদিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর জেলার ছয়টি আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে নয়জন, রংপুর-২ আসনে তিনজন, রংপুর-৩ আসনে ছয়জন, রংপুর-৪ আসনে তিনজন, রংপুর-৫ আসনে আটজন এবং রংপুর-৬ আসনে সাতজন প্রার্থী। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি (রোববার) অনুষ্ঠিত হবে।