হোম অন্যান্যসারাদেশ ঋণ খেলাপি: শিশুসন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে থানাহাজতে রাত কাটল গৃহবধূর

অনলাইন ডেস্ক:

মাত্র ১৭ হাজার টাকা ঋণ খেলাপির দায়ে ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এনজিওর করা মামলার আসামি হয়ে শিশু সন্তান ও শাশুড়িসহ গ্রেফতার হয়েছেন এক গৃহবধূ। রাতভর থানা হাজতে কাটানো গৃহবধূকে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মানবিক বিবেচনায় জামিন দিয়েছেন আদালত। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায়।

আদালতের দেয়া গ্রেফতারি পরোয়ানায় শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে গৃহবধূকে গ্রেফতার করে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ।

গ্রেফতার হওয়া নুপুর মধু (২৬) আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শ্যামল হালদারের স্ত্রী।

গৃহবধূর শাশুড়ি শ্রীমতি হালদার বলেন, ‘এক বছর আগে ক্ষুদ্রঋণদানকারী এনজিও বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) থেকে ৪০ হাজার ঋণ নেন। ৫ মাস আগে ছেলে শ্যামল সৌদি আরবে গেছে। সেখানে গিয়ে দুই মাস বেকার ছিল। তাই ঋণের ১৭ হাজার পরিশোধ করতে পারেননি। এ কারণে বিডিএস থেকে পুত্রবধূ নুপুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

শ্রীমতি হালদার অভিযোগ করেন, মামলার নোটিশ পেয়ে ৫ হাজার টাকা নিয়ে এনজিওতে দিয়েছেন। এ সময় এনজিও থেকে জানানো হয় তিন হাজার টাকা কিস্তি হিসেবে জমা দেবে। বাকি দুই হাজার টাকা দিয়ে মামলা উঠিয়ে (প্রত্যাহার) নিয়ে খরচ করবে। কিন্তু শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ এসে পুত্রবধূকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি আরও জানান, নুপুরের সঙ্গে দুই বছর বয়সী শিশু নাতিকেও পুলিশ নিয়ে যায়। পুত্রবধূকে গ্রেফতারের সময় নারী পুলিশ না থাকায় তাকে (শ্রীমতি হালদার) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাত ১টার পর থেকে তারা থানা হাজতে ছিলেন। শনিবার সকালে তাকে ছেড়ে দিয়ে নাতি ও পুত্রবধূকে বরিশাল আদালতে নিয়ে গেছে।

আগৈলঝাড়া থানার এসআই আমিরুল ইসলাম জানান, আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় নুপুরকে গ্রেফতার করেছেন। সঙ্গে নারী পুলিশ সদস্য না থাকায় শাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে সঙ্গে নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নুপুরকে সন্তানসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আদালতের নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মো. ফুয়াদ জানান, মামলার আসামি হিসেবে নুপুরকে বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শারমিন সুলতানা সুমী মানবিক কারণে জামিন দিয়েছেন।

এ বিষয়ে গৈলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মানিক সরদার বলেন, ‘ঋণ নিয়ে কিস্তি না দেয়ায় গৃহবধূকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাকে আদালত জামিন দিয়েছে বলেও শুনেছি।’

এনজিও বিডিনিএস’র মাঠকর্মী মো. সুমন হোসেন বলেন, ‘ঋণ নিয়েছে এক বছর পার হয়েছে। তাই ঋণ খেলাপির দায়ে মামলা করা হয়েছে।’

নোটিশ দেয়ার পর ৫ হাজার টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি সুমন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন