ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোতে প্রতিনিয়ত উচ্চ শব্দে গান বাজনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যরাতে হলের ছাদে এসব গান বাজনা করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ নানা সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এসব গান বাজনা বন্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা৷ মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে এ অভিযোগ দেন তারা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের হলগুলোতে প্রতিনিয়ত গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে গান বাজানো হয়। একাধিকবার নিষেধ করার পরেও বন্ধ হয় না এ গান। উচ্চ শব্দে মাইক বাজানোর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পরিবেশ বিঘ্ন হচ্ছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে হল বর্তৃপক্ষকে বার বার বলার পরও কেন সুরাহা মেলেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনুমতি সাপেক্ষে কিংবা অনুমতি ব্যতিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ শব্দে গান বাজনা করেন অনেকেই। এতে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ পায় না শিক্ষার্থীরা। এমনকি তারা পরীক্ষার আগের রাতে ঠিক মতো ঘুমাতেও পারে না। গানের উচ্চ শব্দে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের অনেক ডিপার্টমেন্টে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। কিন্তু হলে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর ফলে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছি না। এমনকি আমরা ঘুমাতেও পারছি না। আমাদের হলগুলো যেন পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে।
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা চাই ইবিতে সাংস্কৃতিক চর্চা হোক। কিন্তু তা হতে হবে পড়াশোনা ঠিক রেখে। কিন্তু আমাদের আবাসিক হলগুলোতে প্রায় প্রতি রাতেই উচ্চ শব্দে গান বাজানো হচ্ছে। এতে পড়া-লেখার পরিবেশ বিঘ্ন হচ্ছে। যারা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছে এই গান-বাজনা তাদের পড়াশোনার গতিকে ত্বরান্বিত করছে।
এদিকে, উচ্চ শব্দে গান বাজানোর প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক শিক্ষার্থী।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের গত মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু করা হয়নি। সামনের মিটিংয়ে এটা নিয়ে আলোচনা করবো। তবে শেখ রাসেল হলে অভিযোগ এসেছিল আমি তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা নিয়েছি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর পরই ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য রেজিস্ট্রারের কাছে প্রেরণ করেছি।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, আমি এটা একাডেমিক শাখায় পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা নোট দিবে, পরে ভিসি স্যার ব্যবস্থা নিবে।
এর আগে, একই বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি বলে জানা গেছে।