রাজনীতি ডেস্ক:
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কোনো পরামর্শ দেননি ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্- নির্বচনী প্রতিনিধিদল। তবে তারা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।
বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য আইনের কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল, সেই পরিবর্তন করা হয়েছে। আমি তাদের বলেছি, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরই নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব অফিস-আদালত, ডিপার্টমেন্ট আছে, সেগুলো নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
“এ তিনটি জিনিস দেখলেই বুঝা যাবে শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশ অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক সেটা তারা চায়,” যোগ করেন তিনি।
তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কথা হয়েছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, আমি তাদের বলেছি, শেখ হাসিনার সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ বাংলাদেশের জনগণের কাছে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হবে।
“এই সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা বজায় রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যে আইন প্রণয়ন করেছে তা এই উপমহাদেশে আর নেই, এ দেশেও ৫০ বছর ছিল না।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যকার পার্থক্য জানতে চেয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি সেই পার্থক্যের কথা তাদের অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেছি। নির্বাচন নিয়ে আমাকে কোনো পরামর্শ দেননি তারা, শুধু জানতে চেয়েছেন।
“সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, জুডিশিয়ারি সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন। আমি জুডিশিয়ারির সম্পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরেছি। মামলাজট সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন, এজন্য আমরা কী করেছি সেটি বলেছি।”, বলেন আনিসুল হক।
তিনি বলেন, সংলাপ হবে কি না জানতে চাননি। কেউ নির্বাচনে আসবে না এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে কি না, এটা জিজ্ঞাসা করেছেন। আমি বলেছি, শেখ হাসিনার সরকার চায় সকল দল নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কে নির্বাচনে আসবে, কে নির্বাচনে আসবে না সেটা সেই দলের সিদ্ধান্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি দুই থেকে আড়াই মাস। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ঢাকা সফর করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।
গত শনিবার (৭ অক্টোবর) থেকে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর সফরের পঞ্চম দিনে দলটির প্রতিনিধিরা সচিবালয়ে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে।
প্রথমে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, তাদেরকে নিশ্চিত করা হয়েছে, দেশে বর্তমানে সহিংসতা ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আগামী নির্বাচনে অতীতের মতো সহিংসতার কোনো আশংকা নেই।
এরপর মার্কিন পর্যবেক্ষকরা বৈঠক করেন আইনমন্ত্রীর সঙ্গে।