নিজস্ব প্রতিনিধি :
স্কুলে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে কিনে আনা জুস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর (হরিতলা) গ্রামের মৃত গোপাল দত্তের ছেলে রহিত দত্ত (১১)। এক পর্যায়ে মুখে ফেনা উঠতে থাকে তার। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নানা ঘটনার জন্ম হয়েছে। তাদের ঘরের পাশের ড্রেন থেকে একটি বিষের প্যাকেটও উদ্ধার হয়েছে। সন্দেহের জেরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে শিশু রহিতের মা সুস্মিতা দত্তকে।
অভিযোগ, জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে একমাত্র সন্তান রহিত দত্ত (১১) কে হত্যা করেছেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর (হরিতলা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রহিত নকিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ও মৃত গোপাল দত্তের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে রহিতকে নিয়ে মনোজিত মন্ডল নামের স্থানীয় এক শিক্ষকের বাসায় ভাড়া থাকতেন সুস্মিতা দত্ত।
রহিতের মেজ কাকা উজ্জল দত্ত জানায়, শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে রহিতের মা ছেলের অসুস্থতার বিষয়টি মুঠোফোনে পরিবারের সদস্যদের জানায়। এসময় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে তাদেরকে জানান বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিনে আনা জুস খেয়ে ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠে শরীর নিস্তেজ হতে শুরু করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উজ্জল দত্ত আরও জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। মানুষের কাছে পাওনাসহ তার নিকট থেকে মাঝেমধ্যে কিছু টাকাকড়ি নিয়ে রহিত ও নিজের খরচ চালাতেন সুস্মিতা।
রহিতের অপর কাকা বিশ^নাথ জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় রহিতের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করলে তারা পুলিশেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। এসময় ঘরের পাশে ড্রেন থেকে একটি বিষের প্যাকেট উদ্ধার করেছে। তিনি অভিযোগ করেন পরকীয়ায় জড়িয়ে বিশেষ কোন কারণে রহিতকে তার মা হত্যা করে থাকতে পারে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থানকালে রহিতের মা জানায়, বাইরে থেকে নিয়ে আসা জুস খেয়ে রহিত অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় তাকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পর গোসল করিয়ে শুইয়ে দিলে সে বমি শুরু করে। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠলে আত্মীয় স্বজনকে খবর দিয়ে ছেলেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শ্যামনগর থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মাকে থানায় ডেকে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিতের মা ইদুর মারার জন্য বাসায় বিষ রাখার কথা জানিয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।