হোম অন্যান্যসারাদেশ অস্ত্রের মুখে হাত-পা বেঁধে চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আগ্নেয়াস্ত্র সহ কোটি টাকার সম্পদ লুটের অভিযোগ

নড়াইল অফিস :

নড়াইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামানের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

সশস্ত্র ডাকাত দল হাসানুজ্জামান ও তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নেয় বলে জানা গেছে।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে নড়াইল সদরের মাছিমদিয়ার নিজ বাড়ি ‘ঠিকনা’য়’ এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, দোতলা বাড়িতে উচ্চ বাউন্ডারি ওয়ালের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ছিল । তা সত্বেও রাতের কোন এক সময় ওয়াল টপকে বাড়ির চত্বরে প্রবেশ করে। পরে দোতলা ভবনের নিচতলার পিছন পাশের জানালার গ্লিল কেটে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তারা।

এসময় সাত থেকে আটজনের সশস্ত্র ডাকাত দল হাসানুজ্জামানের দোতলার শয়নকক্ষে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় ঘরে থাকা আলমারি থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার সহ একটি বন্দুক, একটি রিভলবার ও ২৯ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, রাত ২ টায় ফুটবল খেলা দেখে আনুমানিক রাত সাড়ে ৩ টার দিকে শুয়ে পড়ি। হঠাৎ শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি বেডরুমে আমার গলায় রামদা ধরে এবং অস্ত্র দেখিয়ে বলে, আমরা ডাকাত শব্দ করলে জানে মেরে ফেলবো। পরে আমার স্ত্রী ও আমাকে মুখ, হাত-পাা বেঁধে ফেলে। এসময় তারা আলমারি চাবি চাইলে বলি জানিনা কোথায়?

তিনি আরো বলেন, তারা নিজেরা সব উলোট পালোট করে চাবি খুঁজে নিজেরাই আলমারিতে থাকা( সার বিক্রি ও তেল পাম্পের ক্যাশ) নগদ আনুমানিক ত্রিশ থেকে বত্রিশ লাখ টাকা, ছেলে মেয়ের বিয়ের জন্য বানানো পয়ত্রিশ ভরি স্বর্ণালংকার, লাইসেন্স করা দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি নিয়ে যায়। তারা যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইসটি খুলে নিয়ে বাড়ির প্রধান ফটকের তালা খুলে আনুমানিক দশ থেকে বারো জনের ডাকাত দল বের হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ত্রিশ মিনিটের মধ্যে তারা কাজ সেরে বের হয়ে যায়। ভাষাগত কারনে আমি বুঝেছি তারা নড়াইলের আশপাশের এবং লোকাল।

হাসানুজ্জামানের ভাই ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও ব্যবসায়ি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমার ভাইয়ের বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে আমার বাড়ি। বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র ও এত নিরাপত্তা থাকার পরেও এ ধরনের দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারলে সাধারন ব্যবসায়িদের নিরাপত্তা কোথায়? জেলার আইন শৃংখলার চরম অবনতি হয়েছে, দুই তিন আগে ব্যবসায়ি জাহাঙ্গীর কবিরের বাড়িতে ডাকাত দল এসেছিল, টের পেয়ে সে ফাকা গুলি করায় ডাকাত দল পালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ভাইয়ের চিৎকার শুনে ফজরের আযানের আগে আমি দেহরক্ষী সহ আমার বাড়ি থেকে বের হই। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। আগ্নেয়াস্ত্র গুলো উদ্ধার সহ ডাকাতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশের খুলনা রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি আতিকুর রহমান মিয়া, পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোষ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজামুদ্দিন খান নিলু সহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনায় সিআইডি, পিবিআই, ডিবি সহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন