জাতীয় ডেস্ক :
প্রায় চার বছর আগে সাইপ্রাসে পরিচয় হয় নেপালি তরুণী জ্যোতির সঙ্গে বাঙালি যুবক রাসেলের। ভালোবাসার বন্ধন অটুট রাখতে দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। তবে রাসেল মুসলিম ধর্মের হলেও নেপালি ওই তরুণী ভিন্ন ধর্মের। এমনকি দুজন ভিন্ন দেশের নাগরিক। কিন্তু তাদের সম্পর্কের মাঝে ভৌগোলিক দূরত্ব বা ধর্মীয় রীতি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সবকিছু জয় করে অবশেষে তারা দুজন বিয়ের পিঁড়িতে।
বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এখন সংসার পেতেছেন তারা। ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন জ্যোতি। নামও পরিবর্তন করেছেন তিনি। জ্যোতি থেকে হয়েছেন খাদিজা বেগম।
বাঙালি যুবক রাসেলের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চনপুর গ্রামে। ওই এলাকার মনতাজুর রহমান ভূঁইয়ার ছেলে তিনি। নেপালি তরুণী এখন সেই বাড়িতেই স্বামীর সংসারে আছেন।
নেপালের সোনাচুড়ি জেলার হেটড়া শহরেই জ্যোতির বাড়ি। বাঙালি ছেলেকে বিয়ে করার জন্য ২১ বছর বয়সী এ তরুণীকে নেপালে থাকা তার আপনজনদের ফেলে আসতে হয়েছে। তবে লক্ষ্মীপুরে এসে স্বামী ও নতুন পরিবার পেয়ে আনন্দিত জ্যোতি।
রাসেল জানান, জ্যোতি প্রায় চার বছর ধরে সাইপ্রাসের একটি কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সাইপ্রাস থেকে ছুটি নিয়ে একে অপরের দেশের বাড়িতে চলে যান। এরপর গত ২৩ নভেম্বর নেপাল থেকে বাংলাদেশে আসেন জ্যোতি। ঢাকায় পা রেখেই প্রথমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর আদালতে এভিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। একজন নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ের কাবিননামা রেজিস্ট্রিও করা হয়।
গত ২০ ডিসেম্বর রাসেল তার স্ত্রী জ্যোতিকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রায়পুরে যান। গত সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) পারিবারিকভাবে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার পারিবারিকভাবে ঘটা করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় তাদের। এতে আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করা হয়।
নেপালি তরুণী জ্যোতি ওরফে খাদিজা বেগম কথা বলেন বাংলা ভাষায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নেপালে আমার মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই আছে। আমি সবার সম্মতি নিয়েই রাসেলের কাছে চলে এসেছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও গ্রাম্য পরিবেশ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। রাসেল এবং তার পুরো পরিবারকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমি এ দেশেই থেকে যাব।’
রাসেলের মা বলেন, ‘ছেলের বউ দেখে আমরা খুব খুশি হয়েছি। ওদের আনন্দেই আমরা আনন্দিত।’
এদিকে নেপালি এ তরুণীকে দেখতে এলাকার মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তাই প্রতিদিনই উৎসুক জনতা ভিড় করছে খাদিজা-রাসেলের বাড়িতে।