হোম এক্সক্লুসিভ সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার, মামলায় সাক্ষী দিলেন কলারোয়া পৌর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম

সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার, মামলায় সাক্ষী দিলেন কলারোয়া পৌর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 325 ভিউজ

সংকল্প ডেস্ক :

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলার বিচার শুরুর দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার এক জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। জব্দ তালিকা অনুযায়ী ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩ নং সাক্ষী কলারোয়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং স্পেশাল ট্রাইবুনাল-৩ এর বিচারক বিশ^নাথ মন্ডলের আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আদালতে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এ মামলার ৪০ জন আসামীর মধ্যে তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৯ জন আসামী। তবে, এ মামলার অপর আসামী জাবিদ রায়হান লাকী অসুস্থ্য অবস্থায় খুলনা মেডিকেলে ভর্তি থাকায় তিনি আদালতে হাজির না হতে পারায় আসামী পক্ষের আইনজীবিরা সাক্ষীদের কোন জেরা না করে সাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ পিছানোর আবেদন জানান।
আগামী ১৯ জুলাই পি আর বন্ডে অপর দুই সাক্ষী আনছার আলী ও শওকত আলীর সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবি পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।

আসামী পক্ষের আইনজীবি অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২) জানান, ৪০ জন আসামীর মধ্যে জাবিদ হাসান লাকী অসুস্থ্যতাজনিত অবস্থায় খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধিন থাকার কারনে আদালতে হাজির না থাকায় আমরা সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছানোর আবেদন করেছিলাম। এ অবস্থায় শহিদুল ইসলামের সাক্ষ্যে আমরা আসামী পক্ষের আইনজীবীরা জেরা করা থেকে বিরত ছিলাম।

এর আগে গত ২৯ জুন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপনের এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, তাকে সহায়তা করেন অতিরিক্ত পিপি জিপি অ্যাড. আতাউর রহমান , অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাড. জিএম ওকালত হোসেন, অ্যাড. আব্দুল বারী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোটের্র অ্যাড. মোহম্মদ হোসেন প্রমুখ।

অপরদিকে, আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করার জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন, অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমানর পিন্টু ও অ্যাড. শাহানারা পারভিন বকুল।

উল্লেখ ঃ ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন।

সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলার অভিযোগ ওঠে তৎকালীন এমপি হাবিবসহ বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় তৎকালিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, শহিদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৮জনকে সাক্ষী করা হয়। বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই মহামান্য হাইকোর্ট নি¤œ আদালতে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১৭ মে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন। অপর টিআর ১৫১/১৫ মামলাটি ২০২১ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি অভিযোগপত্রে উল্লেখিত তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির। এরমধ্যে আসামী মাহাফুজুর রহমান সাবু কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এবং ৯ জন আসামী পলাতক রয়েছেন। বাকী ৪০ জন আসামী কারগারে রয়েছেন। চলতি বছরের গত ১৬ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন