অনলাইন ডেস্ক:
নাটোরের লালপুর উপজেলায় সুমাইয়া খাতুন সুরমা (১৯) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তবে নিহতের পরিবার বিয়ের সাত মাসেই সুরমার মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না। নিহত সুরমার পরিবারের অভিযোগ, সুমাইয়া আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, যৌতুকের মোটরসাইকেল না দেয়ায় স্বামী আসিফ আলী তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছেন।
নিহত সুরমা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাইপাস স্টেশনের অদূরে ডহরশৈলা গ্রামের সুজন আলীর মেয়ে। তার স্বামী আসিফ আলী লালপুর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের হাসেম মণ্ডলের ছেলে।
এদিকে এ ঘটনায় স্বামী আসিফ আলীকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত সুরমার বাবা সুজন আলী। তবে প্রধান আসামি আসিফ নিজেই আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন৷ কিন্তু জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মার্চ দুই পরিবারের ইচ্ছাতেই বিয়ে হয় সুরমা ও আসিফের। তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুক বাবদ এক লাখ পঁচিশ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলেন আসিফ আলী। টাকা না দেয়ায় তাকে মাঝেমধ্যে শারীরিক নির্যাতন করা হতো। একইভাবে গতরাতেও সুরমাকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হয়। টাকা এনে দিতে না পারায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
তবে মৃত্যুর পর আসিফের মা আঁখি বেগম সুরমার বাবা সুজন আলীকে মোবাইল ফোনে বলেন, তার মেয়ে অসুস্থ। কিন্তু সুরমার বাবা আসিফের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান বারান্দায় পড়ে আছে মেয়ের মৃতদেহ।
এ হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দিতে সুরমার পরিবারের ওপর চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সুরমার বাবা সুজন আলী।
নিহত সুরমার বাবা বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি; তাকে খুন করা হয়েছে। আমি বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসিফের বাবা হাশেম মণ্ডল বলেন, আমার ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল; এটা আমি জানি। তবে সুরমা আত্মহত্যা করেছে নাকি খুন হয়েছে এসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাইবুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও কারাগারে আছেন।