অনলাইন ডেস্ক:
মাধ্যমিক পাস করেন ১৯৯৪ সালে। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষাজীবনের ইতি টানেন। কিন্তু পড়াশোনার নেশা তাকে ছাড়ে না। ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্ব পালন করার পরও ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসিসি) পাস করেন, আর ২০২৪ সালে করেন বিএ পাস। এবার তার স্বপ্ন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা। বলছি ভ্যানচালক হায়দার আলীর কথা।
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শেখ মাটিয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত কাঞ্চন খানের ছেলে হায়দার আলী (৪৭)। অভাব-অনটন আর নিয়তির সঙ্গে লড়াই শুরু শৈশব থেকে। কখনো দিনমজুর কিংবা ভ্যান চালানোই তার জীবিকার প্রধান উৎস।
ভ্যানের চাকা বন্ধের সঙ্গে জীবিকার চাকা বন্ধ হলেও জীবনে কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি হায়দার আলীর শিক্ষা অর্জনের পথে। ভ্যান চালানোর পাশাপাশি লেখাপড়া শেখার অদম্য আগ্রহের কারণে রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে এবং দিনে ভ্যান চালানোর ফাঁকে ফাঁকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতেন হায়দার।
জীবনে কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি হায়দার আলীর শিক্ষা অর্জনের পথে। ভ্যান চালানোর পাশাপাশি লেখাপড়া শেখার অদম্য আগ্রহের কারণে রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে এবং দিনে ভ্যান চালানোর ফাঁকে ফাঁকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতেন হায়দার। ইংরেজিতে তার বেজায় দখল। কথায় কথায় ইংরেজি বলার প্র্যাকটিস ও নতুন শব্দ শেখার আগ্রহ তার শব্দভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। রেডিওতে নিয়মিত আন্তর্জাতিক বিশ্বের সংবাদ শোনাও তার নেশা।
চার সন্তানের জনক হায়দার আলী জানান, ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন তার ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। পৈতৃক সম্পত্তির মধ্যে একটি ঝুপড়িঘর আর ৩ শতাংশ জমি আছে।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন। যত বছরই লাগুক আমি এমএ পাস করবোই করব। চাকরির জন্য না, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার বাসনা থেকে এ শিক্ষা অর্জন করছি। তারপরও যদি একটি অন্য কাজ পাই, তবে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারতাম।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা আজরিন তন্বী জানান, সমাজসেবায় একটি শিক্ষাবৃত্তি থাকে, হায়দার আলী আবেদন করলে তিনি চেষ্টা করে দেখবেন।