হোম অর্থ ও বাণিজ্য জামদানি মেলা উদ্বোধন: হাতে তৈরি এ শাড়ির সুক্ষ্ম নকশা দেখে ‘অবাক হন বিদেশিরা!’

জামদানি মেলা উদ্বোধন: হাতে তৈরি এ শাড়ির সুক্ষ্ম নকশা দেখে ‘অবাক হন বিদেশিরা!’

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 61 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেছেন, জামদানি শাড়ি দেশের একটি ঐতিহ্য। বাংলাদেশে আসা বিদেশি অতিথিরা এ শাড়ির প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়ে থাকেন। হাতে তৈরি জামদানি শাড়ি দেখে অবাক হন তারা। এটি তৈরি অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। বাহারি নকশার কারণে এটি অনন্য। এ শিল্প এবং এর কারিগরদের রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

রোববার (৩১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে ‘জামদানি মেলা-২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

শিল্প সচিব বলেন, শুধু শাড়িই নয়, জামদানি একটি ঐতিহ্য। এর কোন তুলনা নেই। নিজের বৈশিষ্ট্যের কারণেই এটি অতুলনীয়। বিদেশ থেকে যখন অতিথিরা বাংলাদেশে আসেন, তখন তারা জামদানির প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়ে থাকেন। তারা বিশ্বাসই করতে পারেন না যে, সম্পূর্ণভাবে হাতে এ রকম একটি শাড়ি তৈরি করা সম্ভব।

জামদানি শাড়ির বয়ন কেবল শ্রমসাধ্য নয়, এটিকে একটি সুক্ষ্ম কর্ম উল্লেখ করে শিল্প সচিব বলেন, ‘এটা একদিনে হয়নি। শত শত বছর ধরে দেশের সোনারগাঁও, ডেমরা, তারাবো, রূপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ জামদানি শাড়ির জন্য বিখ্যাত। উন্নত বয়ন কৌশল, বাহারি নকশার কারণে জামদানি শাড়ি অনন্য। আমরা জামদানির ইন্টারন্যাশনাল জিআই পণ্য লাভ করেছি। এখন এর প্যাটেন্ট করতে হবে। তাহলে আমরা এর রয়্যালিটি পেতে থাকব।’

শিল্প সচিব বলেন, ‘এ ধরনের প্রদর্শনীর মাধ্যমে জামদানি শিল্পকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে একে পরিচিত করে তোলা যাবে। এ বছর হস্তশিল্পকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তাই এ বছর আমাদের হস্তশিল্প হিসেবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রতি আমাদের নজরদারি অনেক বাড়াতে হবে। এটা শুধু ’প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ হিসেবেই নয়, বরং রফতানি পণ্য হিসেবেও আমাদের এ খাতে নজর বাড়াতে হবে।’

আগামী ২৯ মে এসএমই মেলা শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসএমই মেলাতেও জামদানিকে উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সামনে জামদানিকে তুলে ধরা হবে।

এ শিল্প ও এর শিল্পীদের ঐতিহ্যকে রক্ষা করার জন্য কী করা যায় সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে শিল্প সচিব বলেন, এ ব্যাপারে প্রস্তাব পাওয়া গেলে তা প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হবে।

জামদানি শিল্পকে রক্ষা ও এর প্রসারে বাংলাদেশ বিসিকের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শিল্প সচিব বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য জামদানির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিসিক বহু আগে থেকেই কাজ করে আসছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে ১৯৯৩ সালে বিসিকের তত্ত্বাবধানে ২০ একর জমির ওপর জামদানি শিল্প নগরী গড়ে তোলা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) জামদানির স্বীকৃতি সনদ ২০১৬ সালে প্রাপ্ত হয় বিসিক।

জাকিয়া সুলতানা আরও বলেন, নতুন যারা কারিগর তৈরি হচ্ছেন, তারা নকশা সম্পর্কে তেমন অবগত নন। তবে এ জন্য বিসিকের জামদানি নগরীতেই একটি জামদানি জাদুঘর তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। যেখানে বিদেশিদের জন্য অবকাশ কেন্দ্র থাকবে। জামদানি শিল্পের মান ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি প্রণোদনা দেয়া হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন