সাইফুল ইসলাম শিশির, কুমিল্লাঃ
র্যাব-১১ও র্যাব-১২ এবং র্যাব-১১ ও র্যাব-৯ এর দুইটি পৃথক যৌথ অভিযানে কুমিল্লার চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক ইকতার হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত ২ পলাতক আসামি গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১১ও র্যাব-১২ এবং র্যাব-১১ ও র্যাব-৯ এর দুইটি পৃথক যৌথ অভিযানে গত ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক রোজিনা খান উক্ত আসামিদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা প্রদান করেন। এ বিষয়ে আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে। এক পর্যায়ে র্যাব-১১ এর একটি গোয়েন্দা দল গোপন তথ্যের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামীদ্বয়ের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ফলশ্রুতিতে র্যাব উক্ত আসামীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সদর কোম্পানি, র্যাব-১১ ও র্যাব-১২ এর অভিযানে গত ১৩ জানুয়ারি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন মহাস্থান এলাকা হতে সুমন (৩০), পিতা- ডিপটি মিয়া, সাং- জুরানপুর, থানা-দাউদকান্দি, জেলা- কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা হয় এবং র্যাব-১১ ও র্যাব-৯ এর অভিযানে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌরসভা এলাকা হতে রুবেল (৩৩), পিতা- মৃত খলিলুর রহমান, সাং- জাফরাবাদ, থানা- দেবিদ্বার, জেলা- কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বিকালে ৮টায় সময় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য সুমন, রুবেল, জাহাঙ্গীর এবং ইমরান ইকতার হোসেনের সিএনজি গাড়িতে যাত্রীবেশে উঠে সিএনজি গাড়ীটি নিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার পুটিয়া এলাকায় যায়। উক্ত ছিনতাইকারীরা ভিকটিম ইকতার হোসেনকে হিমালয় মৎস্য প্রজেক্টের মধ্যে নিয়ে কিল, ঘুষি মেরে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে কচুরীপানার মধ্যে লাশ গুম করে তার সিএনজি গাড়ীটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে।
এসময় স্থানীয় লোকজন জাহাঙ্গীর এবং ইমরানদ্বয়কে আটক করে গণধোলাই দিয়ে দাউদকান্দি থানায় সোপর্দ করেন। নিহত সিএনজি চালক ইকতার হোসেন (৩২) কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের আব্দুর রহমান বাবুর্চির ছেলে। এঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ আক্তার হোসেন বাদী হয়ে উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলা বিচারাধীন ছিলো দীর্ঘবছর।
বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালত, কুমিল্লা বিচার শেষে উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি সিএনজি গাড়ীটি ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে বাদীর ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সুমন, রুবেল, জাহাঙ্গীর এবং ইমরানদেরকে মৃত্যুদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা প্রদান করে।
এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় মৃত্যুদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদ্বয়কে র্যাব-১১ ও র্যাব-১২ এবং র্যাব-৯ এর যৌথ আভিযানিক গোয়েন্দা দল কর্তৃক গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।