অনলাইন ডেস্ক:
নতুন চালের পিঠা পুলি আর দেশীয় খাবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব। সবকিছুতেই বাঙালিপনার ছোঁয়া। খাবারের পাশাপাশি গান, নাচ আর কবিতায় দিনব্যাপী মুখরিত ছিল নবান্ন উৎসব। এর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়ে বলে জানান আয়োজকরা।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় পটুয়াখালী শহরের শেখ রাসেল শিশুপার্কে শুরু হয় এই উৎসব।
নতুন চালের নানা ধরনের পিঠা পুলি আর দেশীয় খাবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব। অতিথি আপ্যায়নেও ছিল ভিন্নতা। নতুন ধানের চালের গুড়ার তৈরি বিভিন্ন পিঠা আর দুপুরের খাবারে ছিল মোটা চালের ভাত, লাল শাক, শোল মাছ দিয়ে গোজ আলু আর জলপাইয়ের চাটনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উৎসবে অংশ নেয়া নারী পুরুষদের পোশাকেও ছিল নবান্ন উৎসবের ছোঁয়া। পুরুষরা হলুদের মাঝে সবুজ রঙের পাঞ্জাবি এবং নারীদের পরনে ছিল লাল পাড়ের হলুদ সবুজ চেক শাড়ি।
আয়োজনে ছিল পুরনো দিনের গান, কবিতা নাচসহ বাঙালি সংস্কৃতির নানা কার্যক্রম। পরে দেশীয় বিভিন্ন পিঠা পুলি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।
দুপুরের আয়োজনে ছিল মোটা চালের ভাতের সাথে বেগুন ভর্তা, মরিচ ভর্তা, রসুন ভর্তা, শোল মাছ দিয়ে টমেটো, গোজ আলু দিয়ে শোল মাছ, দেশি মুরগী ভুনা।
দখিনের কবিয়ালের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক জানান, বাঙালি সাংস্কৃতিকর বিভিন্ন পালা পর্বনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নবান্ন উৎসব। শহুরে জীবনেও এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে এমন আয়োজন। নতুন প্রজন্মকে নবান্ন উৎসবসহ বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ ধরনের আয়োজন।
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী মার্জিয়া আক্তার সুমা বলেন, ‘একটি জাতির পরিচয় বহন করে তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচারের ওপর। এই নবান্ন উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম একটি অংশ। আমরা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসবে মিলিত হয়েছি।’
পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বাঙালি সাংস্কৃতির বিভিন্ন পালা-পর্বনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নবান্ন উৎসব। এটি বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়া নবান্নকে আবার ফিরে পাবে, জানতে পারবে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে।
এর আগে নবান্ন উৎসবের উদ্বোধন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পটুয়াখলী -১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য নবান্ন উৎসব। এই আয়োজনগুলো আমাদের শেকড়ের কাছে পৌঁছে দেয়। যে কৃষকরা সারাবছর রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল উৎপাদন করেন অন্ন সংস্থান নিশ্চিত করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।