যশোর অফিস:
যশোরের শার্শা ডিহি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের রোষানলে পড়েছে একটি পরিবার। ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ওই পরিবারটিকে নাজেহাল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আলী। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোযোগ মাধ্যমে (সোস্যাল মিডিয়া) ওই পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আবেদন করেছে পরিবারটি।
অভিযোগ শার্শা ডিহি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হোসেন আলী দীর্ঘদিন ধরে ঘাট নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। এই ঘাট দিয়ে চোরাকারবারীরা অবৈধভাবে ভারতীয় মালামাল নিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, মাদক কারবারীদের কাছে ঘাটটি খুবই নিরাপদ। বিজিবিকে ম্যানেজ করে চোরাকারবারীরা বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য, সোনা চোরাচালানসহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকাÐ চালিয়ে আসছিল। কিন্তু এর প্রতিবাদ করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম তোতা। প্রতিবাদ করার কারণে চেয়ারম্যান হোসেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলামের ওপর। তিনি তাকে শায়েস্তা করতে নানা রকম টালবাহানা করতে থাকে। কিন্তু এতেও কিছু করতে না পেরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজ করে উল্টো মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে তরিকুল ইসলাম তোতাকে।
তোতা মেম্বারের ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম যশোর এম এম কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির নেতা ছিলেন। যশোর শহরে বাসা নিয়ে থাকেন। রাজনীতির পাশাপশি চাকরি খোঁজে আছে। তাকে নিয়ে ওই মহলটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যাতে সে সামনে ভালো জীবনে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে শরিফুল অভিযোগ করেন।
শরিফুল বলেন, আমার পরিবারটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন আমার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে। কিন্তু নব্য আওয়ামী লীগ ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আলী আমার পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। আমার ভাইকে চেয়ারম্যান মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণি করছে। আমাকে নিয়ে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এর প্রতিকার চেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আলীরা সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্ত্রী ফোন ধরেন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব অসুস্থ্য। আপনি কাল আসেন কথা হবে।
সূত্র জানায়, গত ৭ জুলাই শার্শার শালকোনা মাজার রোড থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৯২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। পরে এ ঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় দুই ওই মাদক ব্যবসায়ীসহ মেম্বার তরিকুল ইসলাম তোতাকে আসামি করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে শালকোনা বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ হাবিলদার আমজাদ হোসেন বলেন, চোরাকারবারীরা মাল ফেলে পালিয়ে যায়। আমরা ৩৯২ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করি। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৩জনকে আসামি করা হয়েছে।
শার্শা গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এজাজুর রহমান বলেন, তরিকুল ইসলাম তোতা মেম্বারকে হয়নাণি করা হলে পুলিশ অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবে। কোন মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ কোন নিরহ মানুষদেরকে হয়রানি করবে না। আইন সবার জন্য সমান।