মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায় কাজ শেষ হতে না-হতেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) উঠে গেছে এবং হাতের সঙ্গে উঠে যাচ্ছে পিচ। এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ তদারকি না করার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিইডি বলছে, কাজের মান খারাপ হলে পুনরায় করে দেবে ঠিকাদার। তবে ঠিকাদারের দাবি সঠিক নিয়মে কাজ করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার বাংলাবাজার-দুধখালী সড়কে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ করা হয়। কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকে এন্টারপ্রাইজ সম্পন্ন করে।
এই সড়কের বিভিন্ন অংশের পিচ ঢালাই উঠে গেছে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের আওতায় খানাখন্দে ভরা প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার অনুমোদন হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায় কাজ শেষ হতে না-হতেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) উঠে গেছে। পাথর, বিটুমিনসহ চলমান সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে যান চলাচল করায় এই কার্পেটিং অনেক জায়গায় উঠে গেছে। মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকার বাসিন্দা নীরব মুন্সি বলেন, ‘কাজ খুবই নিম্নমানের হয়েছে। হাতের সঙ্গেই উঠে যাচ্ছে পিচ। রুটির মতো রোলিং হয়ে উঠে যাচ্ছে। ভারী গাড়ির চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে।
’
শুধু নীরব মুন্সী নয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি সংস্কারে এতটা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে যে, কাজ শেষ হতে না-হতেই সড়কের অনেক অংশের পিচ ঢালাই উঠে গেছে। হাত দিয়ে টান দিলেই পিচ উঠে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, ঠিকাদারের লোকজন গাছের পাতা ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করে কাজ করেছেন।
নিয়ম অনুসারে কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে প্রাইম কোট দিয়ে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হওয়ার কথা। তা না করে গাছের পাতা ও ময়লার ওপরই চলছে কার্পেটিংয়ের কাজ। সড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নমানের বিটুমিন, বালি, পাথরের মিশ্রণে কাজ করায় যানবাহন চলাচলের সময় চাকার সঙ্গে অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আরিফুর রহমান মোল্লা বলেন, ছয়জন ইঞ্জিনিয়ার কাজটি তদারকি করেন। যেভাবে কাজ ধরা আছে ঠিক সেভাবেই কাজটি করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম করা হয়নি। সংস্কারকাজে কোনো অনিয়ম হলে পুনরায় কাজ করে দেবে বলে জানালেন মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কৃত্তনীয়া। তিনি বলেন, আমরা সাইট ভিজিট করে যদি অনিয়ম পাই তাহলে ঠিকাদার পুনরায় কাজ করে দেবে।