অনলাইন ডেস্ক …
বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত রোগটির প্রাদুর্ভাব রোধে লকডাউন ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে নেওয়া উচিত হবে না। চিকিৎসাবিষয়ক জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন গবেষকরা। খবর সিএনএনের।
চীন থেকে শুরু হওয়া মারণ ভাইরাস করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশটি কঠোর লকডাউন আরোপ করেছিল। এতে করোনার প্রথম ধাক্কায় তারা সামাল দিতে পেরেছে। তবে গবেষকরা গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে দেখিয়েছেন, আগেভাগেই লকডাউন তুলে নিলে এ ভাইরাসের সংক্রমণ দ্বিতীয় দফায় আঘাত হানতে পারে।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়, যেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে পুরো বিশ্বে। চীনা কর্তৃপক্ষ উহানে ৭৬ দিনের মাথায় লকডাউন তুলে নিয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এখনও বিধিনিষেধ বলবৎ রয়েছে। তারা এখনও ঝুঁকির বিষয়ে সজাগ রয়েছেন। সেজন্যই দেশের ট্রেন চলাচল ও পর্যটনস্পট এখনও পুরোপুরি চালু করা হয়নি।
বুধবার ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সহগবেষক হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোসেফ টি য়ু বলেন, লকডাউনের মতো কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যখন করোনার সংক্রমণ একেবারে নিন্মপর্যায়ে নিয়ে এসেছে, তখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের মতো শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে, সেটি আবারও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
কেননা, লকডাউন তুলে নিলে ব্যবসাবাণিজ্য চালু হবে, কারখানা খুলবে, স্কুল-কলেজগুলো চালু হবে। এভাবে মানুষের মেলামেশা বাড়বে, সামাজিক যোগাযোগ বাড়বে, তাতে ফের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়বে। পুরো বিশ্বে এখনই ভাইরাসটির সংক্রমণ বন্ধ হয়নি। তাতে অন্য কোনো দেশ থেকে ফের চীনেই এ রোগ ফিরে আসার আশংকা রয়েছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিভিন্ন দেশ যদি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে ধীরে নীতি না মানে, তড়িঘড়ি লকডাউন তুলে নেয় এবং জোরালোভাবে করোনার সংক্রমণ তদারকি না করে, তবে এ ভাইরাস ফের ছড়িয়ে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ধীরে ধীরে চালু করাই হবে উপযুক্ত কৌশল।