হোম ফিচার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির অত্যাচারে অতিষ্ঠ ৩৫ সংখ্যালঘু পরিবার!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আলাইপুর গ্রামে ৩৫ ঘর সংখ্যালঘু পরিবারের বসবাস। আর এই ৩৫ ঘর (হিন্দু) সংখ্যালঘু পরিবারের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পার্শ্ববর্তী আলুকদিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান। এমনই অভিযোগ নির্যাতিত সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ১নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও পার্শ্ববর্তী আলুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

সরেজমিন আলাইপুর গ্রামে যান এই প্রতিবেদক। কথা হয় সংখ্যালঘু ৩৫ পরিবারের প্রায় ১৫ জনের সঙ্গে। সবাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ করেন।

গ্রামবাসীরা জানায়, আলাইপুর গ্রামের অমরেশ দাসের স্ত্রী অনিমা রানী দাসের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক মিজানুর রহমানের। তিনি বিভিন্ন সময় অমরেশ দাশের বাড়িতে যাতায়াত করে। কেউ কিছু বলতে গেলে বিভিন্নভাবে মারার হুমকি দেয়।

এছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে এসে আলাইপুর গ্রামের দাসপাড়ায় এক দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত তাস খেলা করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার কথা না শুনলে মারধরসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে। ভয়েতে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন না। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ আলাইপুর গ্রামের ৩৫টি সংখ্যালঘু পরিবার।

আলাইপুর গ্রামের দেবেন দাস জানান, দাসপাড়ার একটি দোকানে তাস খেলা শুরু হইলো। এরপর বিভিন্ন অসামাজিক কাজকর্ম শুরু হলো। এরপর বদনাম হতে শুরু করলো। এখন এখানে বসবাস করার মতো নেই। মিজানুর রহমানের ভয়েতে আমরা কথা বলতে পারি না। আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

দাসপাড়ার বুলু রানী দাস নামে এক নারী বলেন, মিজানুরের ভয়তে আমরা কোন রকম কথা বলতে পারিনা। তার ভয়তে কোন কিছু স্বীকার করতে পারিনা। মিজানুরের বিরুদ্ধে কথা বললে আমাদের বিটাদের (পুরুষ) তুলে নিয়ে যাবে। তারা রাতে কাজ করে বাড়িতে আসে। এসব ভয়তে আমাদের খাওয়া-ঘুম কিছু নেই।

আলাইপুর গ্রামের বৃদ্ধা গিরিবালা দাস বলেন, তার ছেলেকে বিভিন্ন সময় মারধর করে। একদিন ঠেকাতে গেলে মিজানুর আমাকেও মারধর করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেরে ফেলার হুমকি দেয় মিজানুর, এই ভয়তে আমরা কোথাও অভিযোগ দেয়নি।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বিভিন্নসময় বিচার-আচার করতে হয়। তবে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য না। প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন এমন অভিযোগ করা হলো সেটি তিনি বুঝতে পারেননি।

ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম জানান, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে তিনি দাসপাড়ায় যান এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা ওসি মাহফুজার রহমান বলেন, অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন