অনলাইন ডেস্ক:
রাজশাহীতে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় বেডশিট ছুড়ে ফেললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পরে তার নির্দেশেই বেডশিটে আগুন দেওয়া হয়। এরপর ওই অনুষ্ঠানে দেশীয় কিছু কাপড় স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজস্থানের জয়পুর টেক্সটাইলের একটি বেডশিট ছুড়ে ফেলেন। এরপর দলীয় নেতাকর্মীরা কেরোসিন ঢেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
পরে রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা দেন, এখানে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা কিছু কাপড় এনেছেন। স্বল্পমূল্যে এগুলো বিক্রি করা হবে। এরপর সেসব কাপড় বিক্রি করা হয়। সেখানে ২০০ টাকায় শাড়ি ও ১০০ টাকায় লুঙ্গি বিক্রি করা হয়।
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই কারণে আমরা ভারতের পণ্য বর্জন করছি যে, তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না। তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৭ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা। উৎপাদন করি ৩৭ লাখ টন। নানা কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় এবং ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি ঠিক করা যায়, তাহলে কেউ পেঁয়াজ নেবে না।’
রিজভী বলেন, ‘ওরা (ভারত) মনে করেছে, আমরা ওদের ওপর নির্ভরশীল। ওদের ছাড়া আমাদের চলবে না। এখন দেখছে কলকাতা নিউমার্কেট বন্ধ, দোকানগুলো চলে না। আমরা আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। এটা আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমারখালীর লুঙ্গি-গামছা সারা পৃথিবীতে এক্সপোর্ট হয়। আমাদের জামদানি শাড়ি, তাঁতের শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক পৃথিবী বিখ্যাত। এখনও বিয়েশাদি হলে রাজশাহী সিল্ক পরিধান করি। তাহলে কেন এ দেশের নারীরা ভারতীয় শাড়ি কিনবে? কিনতে আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যখন আমাদের উপহাস করে, তখন আমরা কেন কিনবো? কেন আমরা মুখাপেক্ষী থাকবো? আমরা মুখাপেক্ষী থাকবো না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা। এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগরের সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, ওয়ালিউর রহমান রানা প্রমুখ।
এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে রিজভী তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগমের দেওয়া ভারতীয় শাড়ি নিজের হাতে ছুড়ে ফেলে দেন। পরে নেতাকর্মীরা সেই শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারও আগে চলতি বছরের ২০ মার্চ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ফেলে পুড়িয়ে দেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।
‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশি পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করতে অনুষ্ঠানটি হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান রিজভী।