হোম অর্থ ও বাণিজ্য অগ্নি দুর্ঘটনার পরও অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলছে বঙ্গবাজার-নিউ সুপার মার্কেট

অগ্নি দুর্ঘটনার পরও অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলছে বঙ্গবাজার-নিউ সুপার মার্কেট

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 115 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

অগ্নি দুর্ঘটনার একবছর পার হলেও অধিক ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় বহাল আছে রাজধানীর বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেট। দোকান মালিকরা পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি করলেও তা কোনো কাজেই আসবে না বলে একবাক্যে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে দাবি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের।

গতবছর রমজানে এক সপ্তাহের ব্যবধানে অগ্নি দুর্ঘটনার শিকার হয় রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেট। ঈদের আগ মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ব্যবসায়িক মালামাল। ব্যবসায়ীদের চোখের জলে ভিজে শান্ত হয় সেই অগ্নিশিখা।

একবছর পর যেন আরও ভয়াবহ রূপ বঙ্গবাজার মার্কেটের। কাগজ ও পলিথিনের ছাদ এবং বাঁশের বেষ্টনি দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে গোটা বাণিজ্যিক এলাকা। নেই কোনো অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

দোকানদাররা বলেন, আগে তাও টিনের চাল ছিল, এখন তো প্লাস্টিকের ছাউনি। আগুন লাগলে দুই মিনিটও লাগবে না পুড়ে ছাই হতে সব কিছু। নেই অগ্নি নিরাপত্তা।

আরেকজন বলেন, নিরাপত্তাকর্মী আছেন, রাতে পাহারা দেন এটাই।

নতুনভাবে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানায় বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতি।

এদিকে, সরেজমিনে সময় সংবাদ যায় রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে। সেখানে গিয়েও দেখতে পায় রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটের সিলিংয়ে রয়েছে এলোমেলোভাবে টানা বৈদ্যুতিক তার। অথচ গতবছর শর্ট সার্কিটই ছিল এই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ। এছাড়া ভবনে নেই পর্যাপ্ত ভ্যান্টিলেশন ব্যবস্থা। তবে, পানির উৎসের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি দোকান মালিক সমিতির। তাদের কার্যালয়ের আশপাশ ছাড়া কোথাও চোখে পড়েনি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। ব্যবসায়ীরা জানেন না এর ব্যবহারও।

এক দোকানদার বলেন, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র চালাতে পারি না। যখন কোনো দুর্ঘটনা হয়, তখন আশপাশের মানুষজনের চিৎকারে সেটা বুঝতে পারি, কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেছে।

তবে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট বণিক সমিতির সভাপতি এম এ কাশেম বলেন, আমাদের মার্কেটে বিপুল পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আছে, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি পানি তোলার পাম্প আছে। বিপদ যেন না হয়, সেজন্য সেটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ সকল ব্যবস্থা দুর্যোগের সময় কোনো কাজেই আসবে না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক লে. কনেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এমনকি অধিক ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় আছে এ বিপণী বিতানগুলো। পরিস্থিতি বদলাইনি। এখনও এসব মার্কেট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলেও জানান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক লে. কনেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বললেন এসব অস্থায়ী মার্কেট অগ্নি দুর্ঘটনার জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, বিপণী বিতানে অগ্নি নিরাপত্তার জন্য ভবনে পর্যাপ্ত সিঁড়ি ও জরুরি বহির্গমন পথের পাশাপাশি প্রয়োজন অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, স্মোক ও হিট ডিটেক্টর এবং স্প্রিঙ্কলার ব্যবস্থা যা দুর্ঘটনার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছেটাবে; ফায়ার এলার্ম, পানি সরবরাহের জন্য ফায়ার হাইড্রেন্ট, ফায়ার হোজ পাইপ এবং পাম্প।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, অতি ঝুকিপূর্ণ বিপণি বিতানগুলোর অগ্নি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কাজ করা হচ্ছে এবং আলাদা আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ভয়ানক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার পরও প্রায় আগের নিয়মেই চলছে বিপণী বিতানগুলো। যেন আরও একটি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার অপেক্ষায় তারা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন