জাতীয় ডেস্ক :
রাজধানীর উত্তর মুগদায় ১০ মাস ধরে ‘গৃহবন্দি’ থাকা ১৯ বছর বয়সী সেই কানাডিয়ান তরুণী নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন তার বাবা-মা। মুগদা থানার পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে।
আজ রোববার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার (১০ এপ্রিল) তাদেরকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জন্মসূত্রে কানাডীয় ওই তরুণী বর্তমানে উত্তর মুগদায় তার বাবা-মায়ের হেফাজতে আছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এ রিট শুনানির সময় আদালতে কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
রিট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি বাবা-মায়ের ওই সন্তানের জন্ম কানাডায়। ১৯ বছরের ওই তরুণী কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানী ও মা সব সময় বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ডফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকার কানাডিয়ান হাই কমিশনকে জানান, গত ১০ মাস এভাবে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দী করে রাখা হয়েছে। এ সময় ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর কানাডিয়ান হাই কমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট হাইকোর্টে রিট আবেদন করে।
রিটে পুলিশের আইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুগদা থানার ওসি এবং ওই তরুণীর বাবা-মাকে বিবাদী করা হয়।
এ বিষয়ে গত ৫ এপ্রিল আইনজীবী সারা হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, একজন সাবালিকা নারীকে গত বছরে তার মা বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশে আসার পর গত ১০ মাস আটকে রাখা হয়েছে। তাকে মোবাইল ফোনও দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় তাকে হাজিরের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। আবেদনে চাওয়া হয়েছে, তার শিক্ষা জীবন চালিয়ে নিতে তাকে কানাডায় ফিরে যেতে যেন সুযোগ দেওয়া হয়। আদালত আগামী রোববার মেয়েটাকে হাজির করতে আদেশ দিয়েছেন। ওইদিন তার বাবা-মাকেও আদালতে আসতে হবে।