কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :
প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদ এবং মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকরা। বুধবার সকালে কালীগঞ্জ মেইন বাসষ্ট্যান্ডের হোটের ধানশিড়ির সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন আয়োজন করেন কালীগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনন্তাকারীদের বিচার এবং তাঁর মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার আজাদ রহমান, দৈনিক সমকাল পত্রিকার জামির হোসেন, দৈনিক দিকালের জাকারিয়া হোসেন, দৈনিক সিনিয়র সাংবাদিক শাহাজাহান আলী সাজু, কালের কন্ঠ পত্রিকার নয়ন খন্দকার, আরটিভির শিপলু জামান, মাই টিভির আনিসুর রহমান মিঠু মালিথা, মানবধিকার কর্মি ও সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক শিবুপদ বিশ্বাস, বিশিষ্ট ক্রিড়া ব্যক্তিত্ব আজিত ভট্টচার্য প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, রোজিনা ইসলাম একজন সৎ এবং মেধাবী সাহসী সাংবাদিক। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নিউজ করার কারণে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার রোষানলে পড়েছেন। আমরা সাংবাদিক সমাজ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে অনতিবিলম্বে তাঁকে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এক রোজিনাকে কারাগারে নিয়ে দুর্নীতিবাজরা ভেবেছিল সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, এ ঘটনার পর আরও শত রোজিনা ইসলাম তৈরি হবে।
সাংবাদিকদের নির্যাতন করে দুর্নীতির নিউজ বন্ধ করা যাবে না। বরং যারা একাজে জড়িত তাদের চেহারা আরও উন্মোচিত হবে।
এ সময় প্রথম আলোর ষ্টাফ রিপোর্টার আজাদ রহমান বলেন, আমরা সাংবাদিকতা দিয়েই এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করব। আমি নিশ্চিত, কারাবন্দি রোজিনা ইসলাম ফিরে এসে সাংবাদিকতা করেই তাঁর ওপর করা অন্যায়ের জবাব দেবেন। রোজিনা ইসলাম যে ধরনের সাংবাদিকতা করছিলেন বা করেছেন, এ ধরনের সাংবাদিকতা করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমাদের এসব নিয়ে ভাবতে হবে, লিখতে হবে। মূল কথা হচ্ছে আমাদের সঠিক সাংবাদিকতা করে এগিয়ে যেতে হবে।
ধরে নিলাম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ সত্য। যদিও তা সত্য হওয়ার সুযোগ নেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ক্ষমতাবলে রোজিনা ইসলাম আপাকে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখল? তাঁকে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা হলো, এটার জন্য সংশ্লিষ্টদের শাস্তি হওয়া উচিত। রাষ্ট্রীয় অতিগুরুত্বপূর্ণ ফাইল সচিবের দপ্তরে পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায় থাকবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?
পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকের ঘটনা বাংলাদেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর আঘাত করার সমান। সরকারের উচিত তাঁকে শর্তহীনভাবে এবং দ্রæত ছেড়ে দেওয়া। পাশাপাশি তাঁকে হেনস্তা ও নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত । বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিচার না হওয়ার কারণেই এমনটা বার বার ঘটছে।
এজন্য সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার এবং যারা শারীরিকভাবে রোজিনাকে হেনন্তা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।