হোম চট্টগ্রাম গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রদল নেতার সঙ্গে চুক্তি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার!

গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রদল নেতার সঙ্গে চুক্তি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 77 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজারের অন্যতম দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জসিম উদ্দিন বিজয়ের গ্রেপ্তার এড়াতে মাসিক টাকার বিনিময়ে চুক্তি করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহজাহান বখতিয়ারের বিরুদ্ধে। ইতোপূর্বেও বিভিন্ন বিষয়ে থানায় তদবির করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

সস্প্রতি মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়া, বিএনপি নেতাকে খুনসহ এলাকায় সন্ত্রাসী নৈরাজ্য বৃদ্ধি পেলে স্থানীয় জনসাধারণ পুলিশের একটি স্থায়ী ক্যাম্পের (বিট) আবেদন করেন। পরে জেলা পুলিশ থেকে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেখানে পুলিশের ক্যাম্প স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধরতে পারছে না পুলিশ।

সূত্রগুলোর দাবি, পুলিশ বিট থেকে বের হলেই তথ্য চলে যায় ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগেই পালিয়ে যায় তারা।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কালারমারছড়া বাজারে স্থাপিত বিটের পুলিশ সদস্যরা। তাদের মতে, আমরা বিভিন্ন মামলার আসামি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের ধরতে গেলেই তাদের কাছে তথ্য চলে যায়। এতে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

একাধিক সুত্র দাবি করছে, সম্প্রতি মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জসিম উদ্দিন বিজয়কে ধরতে গেলে ছাত্রদলের আহবায়ক শাহজাহান বখতিয়ার তাকে সতর্ক করে দেন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ শাহজাহান বখতিয়ারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু তিনি এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি, পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর ও ফাঁড়ি থেকে পুলিশ সদস্যদের বের করে দেয়ারও হুমকি দেন। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন সেই শাহজাহান বখতিয়ার। পরে স্থানীয় ২০-৩০ জন লোক এনে পুলিশের সঙ্গে মব তৈরির পাঁয়তারা করেন।

বিষয়টি উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা জানতে পারলে বখতিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন। পরে তিনি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে নিচে নেমে আসেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তেই উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহজাহান বখতিয়ারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে।

শওকত ওসমান চৌধুরী নামের এক বিএনপি নেতা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, কালারছড়ার পুলিশ বিটকে বিতর্কিত করার জন্য উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক জসিমের সাথে আলোচনায় মগ্ন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহজাহান বখতিয়ার। শাহজাহান বখতিয়ার ছাত্রলীগের জসিমের কাছ থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে প্রতিনিয়ত চাঁদা নিয়ে থাকেন। এমনকি ছাত্রলীগের জসিমের বাড়িতে রাত্রিযাপনও করেন। দুপুরে (২৯ নভেম্বর) কালারমারছড়া পুলিশ বিটের অফিসার রাজিবকেও নাকি জনসম্মুখে গালিগালাজ করেছেন। সব মিলিয়ে শাহজাহান বখতিয়ার চাঁদার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার এই অপকর্মের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় সাধারণ জনগণ।

উপজেলা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মাতাব্বর লিখেন, সন্ত্রাসী খুনি তারেক শরিফ যখন চেয়ারম্যান ছিল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দায়িত্বেও ছিল সে। তখন কালারমারছড়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসির সাথে বেয়াদবি করে তারেক। আইসি সাহেব বাদী হয়ে অস্ত্র লুটের মামলা করেছিল এবং তাকে কারাগারে যেতে হয়। এখনো যারা সেই পথে হাঁটবে তাদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ ও বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ। আমিও সমর্তন করি সাধারণ মানুষ ও বাজার ব্যবসায়ীর প্রতিবাদের প্রতি। আইন সবার ঊর্ধ্বে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। আইনকে সম্মান করুন, দেশেপ্রেম অটুট রাখুন।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহজাহান বখতিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমার মতো নির্যাতিত উপজেলায় কেউ নেই। আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক কিছু হারিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রশাসনও কোনোদিন বলতে পারবে না, কোনো অন্যায় করেছি। আমি পুলিশকে নিজ থেকে কল দিয়ে বলেছি, আপনারা তাকে গ্রেপ্তার করেন।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক বলেন, জসিমের বিষয়ে পুলিশের কাছে কেউ তদবির করেনি। অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন