হোম জাতীয় মোবাইল টয়লেট পরিচালনা শিখতে বিদেশ যাবেন সরকারি কর্মকর্তারা

মোবাইল টয়লেট পরিচালনা শিখতে বিদেশ যাবেন সরকারি কর্মকর্তারা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 64 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:

স্থানীয় সরকার বিভাগের তিন কর্মকর্তা চীনে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন নতুন পাঁচটি মোবাইল টয়লেট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত সরকারি আদেশ (জিও) অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সহকারী প্রোকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও উপসহকারী প্রোকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন ২৭ অক্টোবর থেকে সাতদিনের জন্য চীন সফরে থাকবেন।

এ ভ্রমণের সব ব্যয় বহন করবে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান শ্যাংডং কিউয়ানবাই ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।

সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা দায়িত্বের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। তবে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে নির্দেশ দিয়ে আসছে যে, কোনো ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে বিদেশ ভ্রমণ অনৈতিক এবং স্বার্থসংঘাতের সৃষ্টি করে।

বিগত সময়ে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিদেশ সফরের ঘটনা নতুন নয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ ছাড়াও বিদ্যুৎ, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), আইএমইডি এবং অন্যান্য সংস্থার প্রায় ৩৫ কর্মকর্তা ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।

এ ধরনের ভ্রমণ সাধারণত নতুন যন্ত্রপাতি, ট্রেইলার, চেইন ডেজার বা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ নাম ধরে অনুমোদন দেওয়া হয়।

সরকারের বিধিনিষেধ অনুযায়ী, জরুরি জাতীয় স্বার্থ ছাড়া কর্মকর্তারা একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না, আর কোনো ভ্রমণ সরকারি অর্থে হলে সেটি ন্যূনতম ও অপরিহার্য হতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন আদেশে দেখা যায়, কর্মকর্তারা ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যয় বহনের সুযোগে প্রশিক্ষণ, ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপটেন্স টেস্ট বা পরিদর্শনের নামে বিদেশে যাচ্ছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কমাতে নির্দেশনা থাকলেও এর ব্যত্যয় হচ্ছে। ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে ভ্রমণ অনৈতিক এবং কর্মকর্তাদের ওপর ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য তৈরি করে। এতে মানসম্মত পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্বে প্রভাব পড়ে।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ‘বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এর ব্যত্যয় চাকরিবিধির পরিপন্থী।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের এ ধরনের ভ্রমণ, বিশেষ করে মোবাইল টয়লেট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি পরিচালনা প্রশিক্ষণের নামে, সরকারের বিদেশ ভ্রমণ নীতির ব্যত্যয় এবং স্বার্থ সংঘাতের দৃষ্টান্ত হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন