সোহাগ মোল্লা:
মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানী কমে গেছে। এর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণও। আর গাড়ী আমদানি কমে যাওয়ায় কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায়ও কমেছে। যদিও গাড়ী আমদানীর ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরে সুযোগ-সুবিধা সবচেয়ে বেশি। যার ফলে এ বন্দর দিয়ে তুলনামূলক বেশি গাড়ী আমদানী হয়ে আসলেও নানা কারণে হঠাৎ তা কমতে শুরু করে। গাড়ী আমদানি কমার পিছনে বিশেষ করে রয়েছে দেশের চলমান অর্থনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতি। দেশে নতুন যে কোন সরকার না আসা পর্যন্ত আপাতত গাড়ী আমদানী বাড়ার তেমন একটা সুযোগের সৃষ্টি হচ্ছেনা।
মোংলা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ জানায়, গাড়ী আমদানী থেকেই কাস্টমসের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। কাস্টমসের মোট রাজস্ব আদায়ের প্রায় ৫৯ভাগই আসে গাড়ী থেকে। কিন্তু গাড়ী আমদানী কমে যাওয়ায় চলতি অর্থ বছরে কাস্টমসের রাজস্ব কমেছে ৪৩৫ কোটি টাকা। আর রাজস্ব কমার হার সাড়ে ২১ ভাগ।
মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার ম. সফিউজ্জামান জানান, ২০২৪-২৫ইং অর্থ বছরের ১১মাসে (মে’২৫ইং পর্যন্ত) মোংলা বন্দরে গাড়ী এসেছে ১১ হাজার ৬৭৬টি। এ থেকে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। আর এর আগে গত ২০২৩-২৪ইং অর্থ বছরে গাড়ী এসেছিল ১৩ হাজার ৭৯২টি। তাতে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি বছর কাস্টমসের রাজস্ব কমেছে ৪৩৫ কোটি টাকা। আর গাড়ী আমদানী কমেছে ২ হাজার ১১৬টি।
কাস্টমস কমিশনার ম. সফিউজ্জামান আরও বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি (উদ্ভুত), ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ ডলার সংকট ও আমদানীকারকদেরও নানা কারণের অনীহায় মুলত গাড়ী আমদানী কমেছে। তবে এ পরিস্থিতি থাকবেনা, আশা করা যাচ্ছে আগামীতে গাড়ী আমদানী ফের বাড়বে।
গাড়ী আমদানীকরক ও বারভিডা’র সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, দেশের অস্থির অর্থনীতি, বিগত ৫ আগস্টের পর থেকে গাড়ী বিক্রি কমে যাওয়া, ক্রেতা না থাকা, মানুষের মাঝে আতংক, বড় একটা গ্রুপ গায়েব ও ব্যাংক ইন্টারেস্ট রেট ১৫% হওয়াসহ নানা সমস্যার কারণে গাড়ী আমদানী কমে গেছে। তিনি আরো বলেন, দেশে নতুন যে কোন সরকার না আসা পর্যন্ত আপাতত গাড়ী আমদানী বাড়ার তেমন একটা সুযোগের সৃষ্টি হচ্ছেনা।
উল্লেখ্য, মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানী শুরু হয় ২০০৯ সালে। ২০০৯ সালের ৩ জনু প্রথম এ বন্দরে ২৫৫টি গাড়ীর একটি চালান আসে। এরপর থেকে চট্রগ্রাম বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দর দিয়ে বাড়তে থাকে গাড়ী আমদানী। গাড়ী আমদানীতে চট্টগ্রামকে পিছনে ফেলে রেকর্ডও করে মোংলা বন্দর। তবে সাম্প্রতিককালে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানী কমে গেলেও শীঘ্রই তা আবার বেড়ে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।