স্পোর্টস ডেস্ক:
অসম্পূর্ণ পার্কিং, হসপিটালিটি বক্স, হোস্টেল রুম আর গ্যালারিতে রঙ করেই কমলাপুর স্টেডিয়াম সংস্কার প্রকল্পের সাড়ে ৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্টেডিয়ামের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হলেও অসম্পূর্ণ রাখা হয়েছে ঢালাইয়ের কাজ! সব মিলিয়ে এই সংস্কার কাজে প্রায় ১৬ কোটি টাকা কোথায় খরচ করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
কমলাপুর স্টেডিয়াম সংস্কার কাজ শেষ দেখিয়ে বিলের পুরোটাই তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শরিফ এন্ড সন্স। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্রের! বাজেট ঘাটতির অজুহাতে পার্কিং এরিয়ায় বড় একটা অংশ ঢালাই না করেই কাজ শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক মো. শামসুল আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘হসপিটালিটি বক্স, প্রেস বক্স নির্মান, গভীর নলকূপের সরবরাহ লাইন স্থাপন এবং ড্রেসিং রুম, ডাইনিং রুম, সাধারণ গ্যালারিসহ অন্যান্য গ্যালারির উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ – শরিফ অ্যান্ড সন্সের সঙ্গে এই সব কাজের চুক্তি হয়েছিল, যার আর্থিক মূল্য ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২১ সালের জুন মাসের দিকে এটির কাজ সমাপ্ত হয়েছে।’
সংস্কারের সিভিল ওয়ার্ক অংশের কাজ করেছে শরিফ এন্ড সন্স। যেখানে কাগজে কলমে দেখানো হয়েছে হসপিটালিটি বক্সের সংখ্যা ৯। তবে তারা নির্মাণ করেছে পাঁচটি। কার্য সম্পাদন তালিকায় মেডিকেল রুম দেখানো হলেও এর বর্তমান চিত্র পিলে চমকে যাওয়ার মতো।
স্টেডিয়ামটির সীমানা-প্রাচীর নির্মাণের জন্যও ছিলো বরাদ্দ। সেটা কতোটা অকাজের সরেজমিন দর্শনেই মেলে প্রমাণ! ভেন্যু অপারেশন কন্ট্রোল রুম, ডাইনিং রুম, কিংবা কনফারেন্স রুমের সম্প্রসারণের মতো বিষয়গুলো শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ, সেখানে কতট সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে তা প্রশ্নবিদ্ধ?
সংস্কার কার্যতালিকায় ছিলো সাধারণ গ্যালারি উন্নয়ন। পাতলা রঙের আবরণ দিয়েই শেষ করা হয়েছে সেই কাজ। বছর দুই না ঘুরতেই সেখানে খানা খন্দ! আর এই সবের জন্য খরচ দেখানো হয়েছে সাড়ে ছয় কোটি টাকা। বিষয়গুলো সাবেক স্টেডিয়াম প্রশাসকের দৃষ্টিগোচর করা হলে তিনি দায় চাপান প্রকল্প পরিচালকের ওপর।
কমলাপুর স্টেডিয়ামের সাবেক প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গেও ফোনে কথা হয় এই বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘টাওয়ারের পাশে করেনি। ঐ পর্যন্তই করেছে। আমার তো জানার কথা না পিঅ্যান্ডডি কতটা করে না করে। এটা তো আমার জিনিস না।
এ তো গেলো সিভিল ওয়ার্ক। কমলাপুর স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল ওয়ার্কে। কাজের মধ্যে দৃশ্যমান শুধু জায়ান্ট স্ক্রিন স্থাপন। এছাড়াও আছে ফ্লাড লাইট, লুমিনার পরিবর্তন এবং সাব স্টেশন উন্নয়ন। সব মিলিয়ে সংস্কার ব্যায়টা ১৬ কোটির কাছাকাছি!
এত টাকা কোথায় খরচ হলো, এটা নিয়ে যারা ভাবছেন তাদের জন্য তথ্য- কমলাপুর স্টোডিয়াম দেখভালের দায়িত্বে যারা, তাদেরই দেখা যায় ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তর্কে জড়াতে। অবৈধভাবে বিক্রি করা হয় স্টেডিয়ামের মালপত্র। এই হিস্যা আবার চলে যায় ওপরের স্যার পর্যন্তও!