অনলাইন ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় ওসি মোহাম্মদ মহসীন নিজেই সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন একজন প্রতারক। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি এ প্রতারকের।
মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩০) নামে ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গাইবান্ধা জেলার সদর থানার ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ মহসীন নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি চালিয়ে আসছেন। সেই আইডিতে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের মূল আইডির অনুরূপ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করেন তিনি।
ম্যাসেঞ্জারে সেই আইডি থেকে তিনি ওসি মহসীন সেজে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে চ্যাট করেন। এদের মধ্যে কারও কারও সঙ্গে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন, কারও কারও সঙ্গে আপত্তিকর ছবি আদান-প্রদান করেন। আবার কারও কারও কাছ থেকে টাকাও দাবি করেন।
তেজগাঁও থানা সূত্রে জানা যায়, ওসি মহসীন প্রথমে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ২২ জানুয়ারি নিজেই বাদী হয়ে তেজগাঁও থানার সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গাইবান্ধা জেলার সদর থানার স্টেশন রোডের দাশ বেকারি মোড়ের ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশের একটি দল।
তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন কালবেলাকে বলেন, এই প্রতারক শুধু আমার নাম ছবি ব্যবহার করেনি, রাষ্ট্রপতি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সবার নামেই ফেসবুক আইডি বানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির নামেও ফেসবুক একাউন্ট খুলেছেন আনোয়ার। তার এই ভুয়া আইডির তালিকায় আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান, তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নুর সজল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আইডি বর্তমানে ডিজএ্যাবল অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাকিগুলো সবই সচল আছে। এসব আইডি থেকে আনোয়ার ওই ব্যক্তি সেজেই বিভিন্ন পোস্ট, ছবি দেন। আর ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে চ্যাট করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারের পড়াশোনার দৌড় ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি গাইবান্ধা সদরের খোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তেন। ৫ম শ্রেণিতে ফেল করার পর পড়াশোনা আর চালিয়ে যাননি। মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতেন আনোয়ার। এদের মধ্যে কারও কারও সঙ্গে ছবিও আদান প্রদান করেছেন। আবার কারও কারও কাছে টাকাও দাবি করেছেন।