হোম জাতীয় লুসির কণ্ঠে গান শুনলেন শেখ রেহানা

জাতীয় ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রন্সিস হল্টের কণ্ঠে গান শুনলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। গান শোনার পর তিনি বলেন, লুসির মানবিক আদর্শ আমাদের সবার ধারণ করা উচিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে তিনি যেসব চিঠি লিখেছিলেন তা সংরক্ষিত করা উচিত বলেও মনে করেন শেখ রেহানা।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বরিশালে লুসিকে দেখতে অক্সফোর্ড মিশনে যান শেখ রেহেনা। সেখানে তিনি তার শারীরিক খোঁজ খবর নেন। এ সময় শেখ রেহেনার অনুরোধে লুসি কাজী নজরুল ইসলামের ‘নাচ ময়ূরী নাচরে’ গানটি শোনান।

অক্সফোর্ড মিশনের ফাদার জন জানান, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া একটার দিকে তাদের মিশনে ফুল, ফল নিয়ে আসেন জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। তার আগমনের খবর দুদিন আগে থেকেই জানতেন তারা। এজন্য রং করে, পতাকা স্টান টাঙিয়ে নতুন সাজে সাজানো হয় লাইব্রেরি হল ও প্রবেশ পথ। আড়ম্বরপূর্ণ কোন আয়োজন নয়, মূলত লুসি হল্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেই সেখানে যান শেখ রেহানা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মিশনের ফাদার ফ্রান্সিস, ফাদার জন, সিস্টার মার্গারেট, সিস্টার শেফালী, সিস্টার শিখা, চার্চের ম্যানেজার রিচার্ড রতন হালদার এবং লুসি হল্টের জীবনী নিয়ে প্রথম ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদক অপূর্ব অপু ও অপসোনিন ফার্মার প্রকল্প সমন্বয়ক সমাজসেবক রফিকুর রহমান।

সেখানে অংশ নেয়া রফিকুর রহমান জানান, দুপুর সোয়া ১টার দিকে হলরুমে ঢুকেই বঙ্গবন্ধু কন্যা লুসি হল্টের কাছে গিয়ে নিজেই প্রথমে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। লুসির পাশের চেয়ারে বসে অনেক মমতা নিয়ে লুসি হল্টের হাত ধরে তার শারীরিক খোঁজ খবর নিয়ে কুশলাদি বিনিময় করেন। নিজে চেয়ার থেকে উঠে সংক্ষিপ্ত সভায় অংশ নেয়া ৮ জনের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা পরিচিত হন, সবার খোঁজ খবর নেন। এসময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা সাংবাদিক অপূর্ব অপুকে শুভেচ্ছা জানান লুসিকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন হওয়া স্বত্বেও তাকে বোঝাই যায়নি তিনি একজন ক্ষমতাধর মানুষ।

এসময় লুসির শারীরিক খোঁজ খবর নিয়ে বরিশালের নানা স্মৃতি চারণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা।

লুসি হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় অক্সফোর্ড মিশন কর্তৃপক্ষ।

প্রাণবন্ত ঐ সভায় শেখ রেহানা গান শোনার আবদার করেন লুসি হল্টের কাছে। লুসিও গান শোনান পরম কৃতজ্ঞতা নিয়ে। কাজী নজরুল ইসলামের ‘নাচ ময়ূরী নাচরে’ গানটি শোনেন শেখ রেহানা। এসময় লুসির কন্ঠে কন্ঠ মেলান বঙ্গবন্ধু কন্যা। পরে, অক্সফোর্ড মিশনে গির্জার ভেতরে যান শেখ রেহানা। কিছু সময় প্রভু যিশুর গির্জা ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং অক্সফোর্ড মিশনের ইতিহাস শোনেন। পরে হাস্যোজ্জ্বল এবং বেশ প্রাণোচ্ছ্বল ভাবেই সবার সঙ্গে ছবি তোলেন শেখ রেহানা। পরে তিনি সেখান থেকে বের হয়ে সার্কিট হাউজে চলে যান।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হল্টের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনকল্যাণকর কাজ নিয়ে ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর সাংবাদিক অপূর্ব অপুর ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আলোচনায় আসেন লুসি হল্ট। লুসির একমাত্র দাবি ছিল বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রাপ্তি। এমন খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। লুসি হল্টের প্রত্যাশা অনুযায়ী পরে ২০১৮ সালে প্রথমে ভিসা ফি মওকুফ যুক্ত পাসপোর্ট হস্তান্তর এবং পরে গণভবনে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন