রাজনীতি ডেস্ক:
সাতক্ষীরার চারটি আসনের একদিকে জোট মহাজোটের সঙ্গে আসন সমঝোতায় প্রার্থিতা হারানোর ভয়, অপরদিকে দলীয় নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় স্বাচ্ছন্দে নেই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা।
বিএনপি-জামায়াতের অংশগ্রহণহীন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরায় ভোটার উপস্থিতিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আবার ভোটার উপস্থিতি বেশি হলে আওয়ামী লীগ বিরোধীরা প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নৌকা হারানোয় ভূমিকা রাখতে পারে-এ আশঙ্কাও রয়েছে অনেকের মধ্যে। এমনই অবস্থায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাতক্ষীরায় একজন প্রবীণ ও তিনজন নবীনসহ নৌকার মাঝি আওয়ামী লীগ মনোনীত চার প্রার্থী।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের বেশ আগেই সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাক হানাদাররা পালাতে থাকে। ১৯ নভেম্বর শ্যামনগর, ২০ নভেম্বর কালিগঞ্জ, ৬ ডিসেম্বর দেবহাটা ও কলারোয়া, ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সদর ও আশাশুনি মুক্ত হয়। এভাবেই মুক্তিযোদ্ধা-জনতা এক একটি এলাকা দখল করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়াতে থাকে। বলা যায় বাংলাদেশের বিজয় উৎসব শুরু হয় এই সাতক্ষীরা থেকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর লাখো ভক্তের এই সাতক্ষীরায় বিজয়ের আনন্দ খুব বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি। ’৭৩ এর নির্বাচনেই সাতক্ষীরায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে জেলার রাজনীতিতে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ব্যাপক উত্থান ঘটে।
বর্তমান সাতক্ষীরা জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা ছিল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে যুক্ত। প্রথমদিকে খুলনার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছার সাথে যুক্ত ছিল তালা ও আশাশুনির নির্বাচনী এলাকা। আবার সাতক্ষীরা সদরের সাথে যুক্ত ছিল কলারোয়া উপজেলার একাংশ। পরবর্তীতে আশাশুনি উপজেলা এবং শ্যামনগর উপজেলা নিয়েও ছিল একক সংসদীয় আসন।
বিগত ১১টি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ ৪র্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিয়ে জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে। ব্যাপকভাবে জনগণ অংশগ্রহণ করলেও ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৮৬ সালের ৭ মে তারিখের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ফলে কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী কতবার জয়লাভ করেছে সেই হিসাব দিয়ে দলের অবস্থান নির্ণয় করা বেশ কঠিন।
সাতক্ষীরা-১ (বর্তমান তালা-কলারোয়া) আসনে বিগত ১১টি নির্বাচনের মধ্যে প্রথম, তৃতীয়, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ৬টি নির্বাচন ও একটি উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এরমধ্যে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয় ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীকে। এই আসনে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগ, চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, পঞ্চম নির্বাচনে জামায়াত, ষষ্ঠ ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করে।
সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে প্রথম, দশম ও একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় সংসদ ও উপনির্বাচনে মুসলিম লীগ, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত, চতুর্থ ও নবম জাতীয় পার্টি এবং ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হন।
বর্তমান সাতক্ষীরা-৩ (দেবহাটা-আশাশুনি-কালিগঞ্জ আংশিক) আসনে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত হন। বর্তমান সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জ আংশিক) আসনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন। সাবেক সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি) আসনে প্রথম ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন। দ্বিতীয় মুসলিম লীগ, তৃতীয় স্বতন্ত্র, চতুর্থ জাতীয় পার্টি এবং পঞ্চম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী বিজয়ী হন।
সাবেক সাতক্ষীরা-৪ (দেবহাটা-কালিগঞ্জ) আসনে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, দ্বতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ নির্বাচনে বিএনপি, সপ্তম নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (নাফি) প্রার্থী নির্বাচিত হন। সাবেক সাতক্ষীরা-৫ (শ্যামনগর) আসনে প্রথম ও সপ্তম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ নির্বাচনে বিএনপি, তৃতীয় ও চতুর্থ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং পঞ্চম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী জয়লাভ করে।
বিএনপি জামায়াতহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অতীতের এই জয় পরাজয়ের হিসাব খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও জেলার রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া সূচিত হয়েছে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে। চারজনের তিনজনই অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং একাধিক প্রার্থী দলের মধ্যে, এমনকি সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা তো রয়েছেনই। কিন্তু জোট-মহাজোটের হিসাব-নিকাশ, দলের মধ্য হতে স্বতন্ত্র প্রার্থী, ভোটার উপস্থিতির বিষয়টি নানামুখী সংশয়ের সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা করা হলেও এখনো প্রার্থীদের অনেকে আশা করেন গোপন অথবা প্রকাশ্য আসন সমঝোতার।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপনের বর্তমান প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন আরো ১১জন। এরমধ্যে বর্তমান নৌকার সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহর পক্ষে আবারো নৌকা পাওযার জন্য তার দলের কেন্দ্র থেকে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় সংসদে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী প্রবীন রাজনীতিবীদ সৈয়দ দিদার বখতের রয়েছে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। দলবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিশন খাওয়া, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বড় ধরনের কোন অভিযোগ নেই এই দুই প্রবীন নেতার বিরুদ্ধে। তাছাড়া যদি কোন ধরনের সমঝোতা হয় সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয়ভাবে এই আসনটি ধরে রাখার জন্য তৎপর বলে দলের একাধিক সূত্র জানায়।
হেভিওয়েট বর্তমান ও সাবেক এই তিন সংসদ সদস্য ছাড়াও এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাসদের জেলা সভাপতি শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু। তার পক্ষে দলের কেন্দ্র থেকে এই আসনটি ছাড় পেতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের কর্মী মো. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইয়ারুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো. খোরশেদ আলম, তৃণমূল বিএনপির সুমি ইসলাম এবং মুক্তিজোটের শেখ মো. আলমগীর।
সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু। দলের ভিতরে বাইরে তার রয়েছে ক্লিন ইমেজ। কিন্তু এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার ভোট তুলনামূলক কম। যেকারণে ৭৩ এর পর কোন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে এখানে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেনি।
এমনকি কথিত আছে, ৭৩ এর নির্বাচনেও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় নৌকা হেরে যায়। সেসময় কলারোয়ার একাংশ সাতক্ষীরা সদর আসনে যুক্ত ছিল। সেখানকার ভোটে সাতক্ষীরায় নৌকার জয় হয়। এই আসনে জাতীয় পার্টিরও দীর্ঘদিন বেশ শক্তিশালী অবস্থান ছিল। নবম জাতীয় সংসদে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএ জব্বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। এছাড়া অতিতের নির্বাচনগুলোতেও জাতীয় পার্টি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পায়। কোন সমঝোতা হলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয়ভাবে এই আসনটি ধরে রাখার জন্য তৎপর বলে দলীয় সূত্র জানায়। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। দশ বছর একটানা সংসদ সদস্য থাকায় এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারসহ দলের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির একটি অংশ তার নিয়ন্ত্রণে।
ভোমরা, আলিপুর, ঘোনা, বৈকারীসহ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের কাছে একজন দানবীর কর্মবীর মানুষ হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আফসার আলী। এছাড়াও সদরে এনপিপির মো. আনোয়ার হোসেন, জাকের পার্টির শেখ ইফতেখার আল মামুন সুমন, ওয়ার্কার্স পার্টির মো. তৌহিদুর রহমান, বিএনএম-এর মো. কামরুজ্জামান বুলু, তৃণমূল বিএনপির মোস্তফা ফারহান মেহেদী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের এনছান বাহার বুলবুল মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
সাতক্ষীরা-৩ (দেবহাটা-আশাশুনি-কালিগঞ্জ আংশিক) আসন পুনর্গঠনের পর নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা, সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত মুখ ডা. আ.ফ. ম. রুহুল হক। গত ১৫ বছরে তার নির্বাচনী এলাকায়, এমনকি সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আগামীতেও পিছিয়ে পড়া এই উপকূলীয় জনপদের উন্নয়নে তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন অনেকে। ফলে এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি নিজেই-এমনটি মনে করেন অনেকে। তবে, এই আসনের একাংশ সাবেক সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি) আসনে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অঘটন ঘটান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এড. স. ম. সালাউদ্দিন। তিনি পরবর্তীতে জাতীয় পার্টিরও প্রার্থী হিসেবে সংসদে যান। তার পরিবারের সদস্য এড. স. ম. আলিফ হোসেন এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী। ফলে তাকে দুর্বল ভাবা উচিত হবে না বলে অনেকে মনে করেন। এই আসনে আরও প্রার্থী রয়েছেন স্যাম্যবাদী দল (এমএল) এর পলিট ব্যুরো সদস্য শেখ তরিকুল ইসলাম, এনপিপির মো. আব্দুল হামিদ, জাকের পার্টির মো. মঞ্জুর হোসেন এবং তৃণমূল বিএনপির জাসদ নেতা রুবেল হোসেন।
সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন। জেলায় রয়েছে তার ক্লিন ইমেজ। পিতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একে ফজলুল হক সাবেক সাতক্ষীরা-৫ আসনের দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য। পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে শ্যামনগরজুড়ে।
এ আসনে রয়েছেন শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত সাবেক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজা। তিনি এবার বিএনএম থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। দলবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিশন খাওয়া, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বড় ধরনের কোনো অভিযোগ নেই এই নেতার বিরুদ্ধে। এই আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে লড়ছেন দুইবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবর রহমান। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মাসুদা খানম, তৃণমূল বিএনপির আসলাম আল মেহেদী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. শফিকুল ইসলাম, এনপিপির শেখ একরামুল ও স্বতন্ত্র মো. মিজানুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
সবমিলিয়ে জেলার চারটি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত না দেখে কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিসাব নিকাশ।