বাণিজ্য ডেস্ক:
করোনা মহামারির পর থেকে এখন পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কিউবার অর্থনীতি। অর্থনৈতিক সংকট দিনকে দিন প্রকট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ নেতা ও মন্ত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি কিউবার টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরেছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ নেতা ও মন্ত্রীরা। তারা বলেন, দেশে টানা চার বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। রাজস্ব কমার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট।
এ বিষয়ে কিউবার অর্থনীতিবিদ ওমর এভারলেনি জানান, দেশে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। দেশের মন্ত্রীরা যেমনটি বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি ঠিক ততটাই ভয়াবহ।
দেশটির কৃষিমন্ত্রী ইদায়েল জেসাস পেরেজ বলেন, দেশে প্রাক্-সংকটকালের তুলনায় শূকরের মাংস, চাল ও শুঁটিজাতীয় উদ্ভিদের উৎপাদন নেমেছে ৮০ শতাংশেরও নিচে। পাশাপাশি ডিমের উৎপাদনও কমেছে ৫০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পর থেকে কিউবার খাদ্য উৎপাদন, ওষুধ সরবরাহ ও যোগাযোগ খাতের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে চলতি বছরও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
মূলত আমদানিনির্ভর কিউবা প্রয়োজনীয় খাদ্য ও জ্বালানির বড় অংশ দেশের বাইরে থেকে সংগ্রহ করে। তবে মহামারির পর থেকে কমতে শুরু করেছে দেশটির রাজস্ব। পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও পর্যটন খাতের দুরবস্থা দেশটির অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
দেশটির প্রথম উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী তানিয়া মার্গারিতা ক্রুজ জানান, কিউবার হাসপাতালে এখন গজ ও তুলার মতো মৌলিক পণ্যের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় এসব উপকরণের অন্তত ৩০ শতাংশ সংকট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া মৌলিক ওষুধের সংকট রয়েছে ৬৮ শতাংশ।
জ্বালানি সংকটের কারণে দেশটির গণপরিবহন খাতের কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে দেশটির পরিবহনমন্ত্রী এদুয়োর্দো রদরিগেজ দাভিলা বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে হাভানা শহরে দিনে ২ হাজার ৫০০ বাস চলাচল করত। চার বছর আগে বাসের সংখ্যা নেমে আসে ৬০০টিতে। আর বর্তমানে বাস রয়েছে মাত্র ৩০০টি।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত অর্থনীতির সংস্কার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। তবে তহবিল সংকটের কারণে চলমান পরিস্থিতি নিরসনে কোনো কার্যকরী পদক্ষেট নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।