স্পোর্টস ডেস্ক:
দিল্লীর এই মাঠেই গত ম্যাচে ২৭২ রান করে ভারতের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি আফগানরা। সেই একই মাঠে রোববার (১৫ অক্টোবর) প্রথম ইনিংস শেষে আফগানদের স্কোরবোর্ডে রান ছিল ২৮৪। অনুমিত ছিল, ইংল্যান্ডের শক্তিশালী বোলিং লাইনের বিপক্ষে ধোপে টিকবে না এই সংগ্রহ। তবে সেই রান নিয়ে রীতিমতো ইংল্যান্ডকে নিয়ে ছেলেখেলা করলো আফগানরা। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন ঘটিয়েছে আফগানিস্তান।
দিল্লীর অরুণ অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ৬৯ রানে হেরেছে ইংল্যান্ড। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামিয়ে আনার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন দুই আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন এই দুই স্পিনার।
এই হারে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে অনেকটা পিছিয়ে গেল ইংলিশরা। তিন ম্যাচে মাত্র এক জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচেই থেকে গেলেও সাবেক চ্যাম্পিয়নদের জন্য সেরা চারের রাস্তাটা এখন বেশ কঠিন। অন্যদিকে, ইংলিশদের বিপক্ষে এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে খানিকটা উপরে উঠে এসেছে আফগানিস্তান।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকেন গুরবাজ। অন্যপ্রান্তে ইব্রাহিম জাদরান রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকলেও গুরবাজ ক্রিস ওকসকে মেরে খেলছিলেন। তাতে ৩৩ বলেই অর্ধশতকে পৌঁছে যান তিনি।
আফগানিস্তানের দলীয় শতক পার হওয়ার কিছুক্ষণ পর আদিল রশিদের বলে জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাদরান। ৪৮ বলে ২৮ রান করেন তিনি। এরপর রহমত শাহকেও স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন রশিদ। বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গুরবাজ ফেরেন রান আউট হয়ে।
হাশমতউল্লাহ শহীদি, আজমতউল্লাহ ওমারজাই এবং মোহাম্মদ নবি কেউই পেরোতে পারেননি ২০ রানের ঘর। শেষদিকে রশিদ খান এবং মুজিব উর রহমানের ঝোড়ো ইনিংসে ২৫০ পেরোয় আফগানরা। ইকরাম আলখিলি ভালোভাবে সঙ্গ দিয়েছেন তাদের। এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে নেমে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফেরার পর দ্রুত গুটিয়ে যায় আফগানদের ইনিংস।
আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ৫৭ বলে ৪ ছক্কার পাশাপাশি ৮ টি চার মেরেছেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে নেমে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন ইকরাম আলিখিল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩ রানের মাথায় জনি বেয়ারস্টোর উইকেট হারায় ইংলিশরা। অসাধারণ এক বলে জো রুটকে বোল্ড করে ফেরান মুজিব উর রহমান। গত কয়েক ম্যাচে ধারাবাহিক ব্যাটিং করা ডেভিড মালানকে ফেরান মোহাম্মদ নবি।
৬৮ রানে তিন উইকেট হারানোর পর বিপর্যয় সামাল দিতে উইকেটে আসেন জস বাটলার। কিন্তু তাকেও বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান নাভিন উল হক। লিয়াম লিভিংস্টোনকে এলবিডব্লিউ করে সাজঘরের পথ ধরান রশিদ খান।
স্যাম কারেনকে ফেরান মোহাম্মদ নবি। ক্রিস ওকস বোল্ড হন মুজিবের বলে। এক পাশে নিয়মিত উইকেট পড়লেও অন্য প্রান্তে একাই দলকে টেনে যাচ্ছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু তাকেও সাজঘরের পথ ধরান মুজিব। ৬১ বলে ৬৬ রান করেছেন ব্রুক।
শেষদিকে আদিল রশিদ, মার্ক উড এবং রিস টপলি কিছুটা চেষ্টা চালিয়েছেন। তবে সেটা ব্যবধান কমানো ছাড়া কোনো কাজে আসেনি। ঐতিহাসিক জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে আফগানরা।