হোম রাজনীতি মুফতি হান্নানের দণ্ডকে ‘জুডিশিয়াল কিলিং’ বললেন মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক:

জঙ্গিনেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ডকে ‘জুডিশিয়াল কিলিং’ বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারের পদত্যাগ, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ১ দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্যাংশন ও মার্কিন ভিসা নীতির ওপর নির্ভর না করে আন্দোলনের মাধ্যমেই বিএনপি এ সরকারকে হটাবে। তিনি বলেন, সরকার পতনে যা কিছু করা লাগে তাই করা হবে।

২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। এরপর তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। তার এই দণ্ড জুডিশিয়াল কিলিং।’

বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা এবং অনেকগুলো হামলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুফতি হান্নানের নাম। ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এমএস কিবরিয়াকে হত্যা, ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল মুফতি হান্নান।

সিলেটে গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৭ সালের এপ্রিলে মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়।

২০০৭ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মুফতি হান্নান। তার সেই জবানবন্দি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পুরো দৃশ্যপট বদলে দিয়েছিল।

জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান স্বীকার করেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রথম চিন্তা মাথায় আসে তার। এতো বড় একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য যুৎসই প্লাটফর্ম খুঁজছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুল সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দীনের কাছে শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রস্তাব দেন মুফতি হান্নান।

মাওলানা তাজউদ্দীন এবং মুফতি হান্নান পরস্পর পরিচিত ছিলেন। ২০০৪ সালের প্রথম দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদে তাদের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে তারা তারেক রহমান এবং লুৎফুজ্জামান বাবরের সাথে দেখা করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল জানিয়েছিলেন, মামলার অভিযোগপত্রে এই বিষয়টি উঠে আসে। অভিযোগপত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাওলানা তাজউদ্দীন তাকে (মুফতি হান্নান) আব্দুস সালাম পিন্টুর কাছে নিয়ে যান। পিন্টু নিয়ে যান লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছে। তখন লুৎফুজ্জামান বাবর এবং কায়কোবাদ মিলে হাওয়া ভবনে আসেন। কায়কোবাদ তখন কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

মুফতি হান্নান তার জবানবন্দিতে জানান, হাওয়া ভবনের বৈঠকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআই’র তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন তারেক রহমান।

মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগীরা যাতে হাওয়া ভবনে আর না আসেন সেই নির্দেশনা দিয়ে তারেক রহমান তাদের বলেন, আপনারা বাবর সাহেব এবং আব্দুস সালাম পিন্টুর সাথে যোগাযোগ করে কাজ করবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন