অনলাইন ডেস্ক:
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ‘চোর সন্দেহে’ জহির উদ্দিন বেচু (৪০) নামে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও থেকে শনাক্ত হওয়া তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ছবিরপাইক গ্রামের ধুমচর ছমিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জহির উপজেলার সুন্দলপুর ইনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর লামছি গ্রামের মৃত মোহাম্মদ মোস্তফার ছেলে।
গ্রেফতার তিন জন হলো– ওই গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার দুই ছেলে হাবিব উল্লা (৪৫) ও অজিউল্লা লিটন (৪০) এবং সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মৃত মুকবুল আহমেদ চৌকিদারের ছেলে আবদুর রব খান সাহেব (৬৫)।
ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, জহির উদ্দিন বেচুকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। গুরুতর জখম নিয়ে তিনি কাতরাচ্ছেন আর লোকজন তা দেখলেও কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোররাতের দিকে একদল লোক চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন জহির উদ্দিন বেচুকে আটকের পর পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে বেচুর চোখে, মুখে, হাতে, পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুচিয়ে খুচিয়ে জখম করা হয়। অমানুষিক নির্যাতনের পর একটি গাছে বেঁধে রাখা তাকে। সকাল ৯টা পর্যন্ত এই অবস্থায় কাতরাতে থাকেন বেচু। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় সকাল ১০টার দিকে মিয়ারহাট বাজারের কাছে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
কবিরহাট উপজেলা সমাজসেবা অফিসার হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, নিহত জহির উদ্দিন বেচু ২০২০ সাল থেকে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছিলেন।
কবিরহাট থানার ওসি শাহীন মিয়া বলেন, ‘ঘটনার সময় ফোনে ধারণ করা ভিডিও দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০-২৫ জনকে। গ্রেফতারকৃতদের রবিবার দুপুরের দিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’
Google News Logoবাংলা ট্রিবিউনের খবর পেতে গুগল নিউজে ফলো করুন