খেলার সংলাপ:
ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের মৃত্যুতে হৃদয়ছোঁয়া বার্তায় ফুটবলের রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েন তার স্বদেশী ফুটবল তারকা নেইমার।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন এদসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো ।
ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ৮২ বছর বয়সে মারা গেছেন ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর কন্যা কেলি নাসিমেন্তো।
পেলের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেইমার পেলের ছবিসহ একটি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, পেলের আগে ১০ কেবলই একটি সংখ্যা ছিল—আমি এই বাক্যাংশটি আমার জীবনের কোনো এক সময়ে কোথাও পড়েছি। কিন্তু সুন্দর এই বাক্যটি অসম্পূর্ণ। আমি বলব—পেলের আগে ফুটবল ছিল শুধু একটি খেলা।
‘পেলে সব বদলে দিয়েছেন’ উল্লেখ করে নেইমার বলেন, তিনি ফুটবলকে শিল্পে, বিনোদনে পরিণত করেছিলেন; গরিব, কৃষ্ণাঙ্গ এবং বেশির ভাগ মানুষের কণ্ঠস্বর হয়েছেন: ব্রাজিলকে দিয়েছেন দৃশ্যমানতা ।
নেইমার আরও বলেন, ফুটবল ও ব্রাজিলের মর্যাদা বাড়িয়েছেন (পেলে)। রাজাকে ধন্যবাদ! তিনি চলে গেছেন কিন্তু তার জাদু রয়ে গেছে। পেলে চিরদিনের জন্য!
ফুটবলের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অনেকের কাছে প্রশংসিত পেলে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৮ বিশ্বকাপ চলাকালে তাঁকে হুইলচেয়ারে বসা অবস্থায় দেখা যায়। সেই টুর্নামেন্টের এক মাস পরেই পেলেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর থেকে তিনি ডাক্তারদের কাছ থেকে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু ২০২২ সালের শেষের দিকে তাঁকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। কাতার বিশ্বকাপজুড়ে এবং এরপর ক্রিসমাসের সময়েও পেলে সাও পাওলোর হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো পুরো সময়জুড়ে অসুস্থ বাবার স্বাস্থ্যের খবরাখবর বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন।
বর্ণিল এক জীবন কাটিয়েছেন পেলে। পেয়েছেন অনেক স্বীকৃতি। ১৯৯৯ সালে শতাব্দীর সেরা অ্যাথলেট হিসেবে স্বীকৃতি পান আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছ থেকে। ফিফার ‘প্লেয়ার অব দ্য সেঞ্চুরি’ হয়েছেন ম্যারাডোনার সঙ্গে যৌথভাবে।
১৩৬৩ ম্যাচ খেলে ১২৭৯ গোল করেছেন পেলে। ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটাই তিনি কাটিয়েছেন সান্তোসে। ১৫ বছর বয়সে ক্লাব ও এক বছর পর জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর দেশের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। ১৯৭৭ সালে ফুটবলকে বিদায় বলেন এই কিংবদন্তি।