নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা হাটখোলা মোড়ের পল্লী চিকিৎসক আজগার আলী বাবুর অপচিকিৎসা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ প্রয়োগের ফলে শেখ মাছুম বেলাল(২৬) নামে এক রোগীর জীবন এখন হুমকির মুখে। অসুস্থ্য ও আতঙ্কগ্রস্ত মাছুম বেলালকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি শহরের রাজার বাগান ছাকার মোড় এলাকার আক্তার হাজীর ভাড়াটিয়া আব্দুস সালেকের পুত্র।
এবিষয়ে ভুক্তভোগীর মা মোছাঃ সুফিয়া বেগম প্রতিকার চেয়ে ১৩ই এপ্রিল জেলা সিভিল সার্জন ও সাতক্ষীরা সদর থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।অসুস্থ্য মাছুম বেলালের মায়ের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।
গত শুক্রবার (৮ এপ্রিল) আমার ছেলে মাছুম বেলালের (২৬) সারা দিন ১০/১২ বার পাতলা পায়খানা হয়। রাতে সে দূর্বল হয়ে কিছুটা সঙ্গাহীন হয়ে পড়লে পল্লী চিকিৎসক আজগার আলী বাবুকে ডাকা হয়।৮ই এপ্রিল গ্রাম ডাক্তার আজগার আলী রাত ১২ টার দিকে এসে তাকে কলেরা স্যালাইন সহ কিছু ইঞ্জেকশান প্রয়োগ করেন। পরে দেখা যায় কলেরা স্যালাইনের মেয়াদ ৩ মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। পর দিন আজগার আলী আবারও তাকে চিকিৎসা দেন এবং কিছু টেস্ট দিয়ে সেগুলো হার্ট ফাউন্ডেশন থেকে করাতে বলেন।
মাছুম বেলালের মা আরও জানান, চিকিৎসক আজগার আলী বাবু চিকিৎসা দিয়ে যাবার পর থেকে তার ছেলের শরীরে অস্থিরতা দেখা দেয়। চোখের সাদা অংশে রক্ত জমাট বাধার মত লালচে দাগ পড়ে যায়। এক পর্যায়ে চোখ আটকে যায় বাসায় ঝোলানো কলেরা স্যালাইনের খালি প্যাকের দিকে। তাতে দেখা যায় ব্যবহৃত স্যালাইনের মেয়াদ জানুয়ারি মাসেই শেষ হয়ে গেছে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মাছুম বেলালকে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পরে স্থানীয় দৈনিক পত্রদূত, যুগের বাতা,সাতনদী,আজকের সাতক্ষীরা সহ কয়েকটা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে গ্রাম ডাক্তার আজগার আলী বাবু বিভিন্ন ভাবে ভয় ভিতি দেখাতে থাকে বলে ভিক্টিমের মা সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেছে।
তিনি আরও বলেন তার ভয়ে সম্পন্ন চিকিৎসা না করিয়ে ১৪ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে আমার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আছি।ওইদিন দুপুরে আমার ভাড়া বাড়িতে গ্রাম ডাক্তার বাবুসহ ৩-৪ জন এসে আমার ছেলেকে বলছে বেলাল আমার ভুল হয়ে গেছে।আমাকে মাফ করে দাও।আমি তোমাকে কিছু ফলমূল কিনে দিবানে।কয়েকটা লিখিত কাগজ নিয়ে আমাকে খুজতে থাকে সই করানোর জন্য।আমি সামনে না যাওয়ায় আমাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়।১৫ই এপ্রিল শুক্রবার সকালে ৪-৫ ডাক্তার পূনরায় আমার বাড়িতে আসে এবং বলতে থাকে সই না করিলে তিনি আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসায়ে দিবেন বলতে থাকেন।তাদের কথা শুনে আমি ভয়ে পাশে একজনের বাড়িতে গিয়ে পালাই।এ দিকে বাড়ির মালিক আমাদের কে চাপ দেচ্ছে ঝামেলা না মিটলে ঈদের পরে বাসা ছাড়তে হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাম ডাক্তার আজগার আলী বাবু সংবাদ প্রকাশের আগে বলেন রোজার মাসে রাতে রোগী দেখার সময় তাড়াহুড়া করতে গিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ভুল হয়েছে, আপনারা আমাকে মাফ করে দেন। স্থানীয় দৈনিক কয়েকটা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে তিনি বলেন উক্ত মেয়াদোউত্তর্নী স্যালাইন আমি দেইনি।তার ভয়েস রেকর্ড করা আছে বল্লে,তিনি অশিকার করেন।
ভিক্টিমের বাড়ি যেয়ে একাধিক হুমকির কথা অশিকার করেছেন তিনি।আজগার আলীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে টেস্টের নামে কমিশন বাণিজ্যসহ রয়েছে নানান অভিযোগ রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ গোলাম কবির বলেন এ বিষয়ে দুই পক্ষ থেকে দুটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত বিষয় তদন্ত চলছে।তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।