বাণিজ্য ডেস্ক:
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দেশজুড়ে বিভিন্ন খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন হবে। তাই ওই সময় বাজারে একটা কাঁপন আসবে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। তবে সেই কম্পন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মত তার।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে কৃষিজ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের সদিচ্ছা নিয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে একথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় চা-চিনি বেশি খাওয়া হবে। হাজার-হাজার, লাখ লাখ কাপ চা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে সময় বিভিন্ন খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনও করা হবে। তাই ওই সময়ে বাজারে একটা কাঁপন আসবে। তবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব।
বাজারের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেটের কোনো অস্তিত্ব নেই এবং এর সঙ্গে রাজনীতিরও কোনো সম্পর্ক নেই মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, দেশে উঠতি প্রবৃদ্ধির কারণে দাম বেড়েছে। তাছাড়া মানুষের আয়ও বেড়েছে।
তিনি বলেন, মানুষের আয় বাড়লে মানুষ তার সন্তানকে ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে চায়। অনেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে না গিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেলে যেতে চায়। মানুষের আকাঙ্ক্ষার কারণেই দাম বেড়েছে।
সিন্ডিকেট বলে স্থায়ী কোনো সংস্থা নেই উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ আছে। সামাজিক স্থিতিশীলতা, শান্তি , ধারাবাহিকতা, সুরক্ষা করা প্রয়োজন। মালয়েশিয়ায় মাহাথির মোহাম্মদ একটানা ২২ বছর শাসন করেছেন। কাজেই আমাদের দেশে স্থিতিশীলতা প্রয়োজন আছে। গত ১৫ বছরে আমাদের স্থিতিশীলতা বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি, জাতীয় সম্পদ, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেড়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক বা মধ্য পর্যায়ে আছি। প্রতিনিয়ত আমাদের নতুন নতুন ভোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের আয় বাড়ছে। জোগানের তুলনায় মানুষের চাহিদা বাড়ছে। ফলে বাজারে মিস ম্যাচ হচ্ছে। এমনটি আমেরিকায় ও সুইজারল্যান্ডেও হচ্ছে। কিন্তু তাদের বাজারটা অনেক গভীর। আমাদের নবীন অর্থনীতি। একটি কিশোর ছেলের যেমন চঞ্চলতা থাকে, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের অর্থনীতিও চঞ্চল অর্থনীতি।
এদিকে বাজারকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না উল্লেখ করে পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়াম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জান।
এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে সমবায় সমিতির মাধ্যমে কৃষককে শক্তিশালী করা, বাজার সিন্ডিকেটকে শাস্তির আওতায় আনা, অসাধু ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল করে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়াসহ ৭ দফা সুপারিশ দিয়েছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। ‘কৃষিজ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের সদিচ্ছা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি ইডেন কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয়া। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র দেয়া হয়।