মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি :
মনপুরায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকে হেনস্তা করায় ওসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের সাথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের আশংকা, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের কাছে ছাত্রলীগ সভাপতির লিখিত অভিযোগ । ভোলার মনপুরায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা থানায় গেলেই গালিগালাজ করার পাশাপাশি গুলি করতে পিস্তল ও বন্দুক নিয়ে তেড়ে আসার অভিযোগ ওঠেছে মনপুরা থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন সাগর। গত রোববার বিকেলে মনপুরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন সাগর থানায় গেলে ওসি অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। পরে ওই ছাত্রলীগের সভাপতিকে কলার ধরে থানায় হাজতে নিয়ে যায় ওসি। পরে আ’লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে ছেড়ে দেয় ওসি। এর আগে ১৬ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে যুবলীগ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির একটি অভিযোগ নিয়ে সন্ধ্যায় থানায় গেলে গুলি নিয়ে মারতে তেড়ে আসে ওসি। এই ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। যে কোন সময়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা স্থানীয় আ’লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের।
মঙ্গলবার এমন পরিস্থিতিতে ওসির বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, আইজিপি, বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি, ভোলার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি শাসুদ্দিন সাগর। এছাড়াও জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একই অভিযোগ দিয়ে বিচার দাবি করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী বিষয়টি পুলিশ সুপারকে অবিহিত করেন বলেও জানান। জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের এক নির্দেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ওসি শাখাওয়াতকে বদলি করা হয়। ওই আদেশের পরই সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের দেখলেই ওসি ক্ষেপে ওঠেন। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক। অপরদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী ( স্বতন্ত্র) আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন মোঃ নিজাম উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে নিজাম উদ্দিন ওসি শাখাওয়াতের আত্মীয় । ফলে আত্মীয় নিজামকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ওসি। এর জন্য মোটা অংকের টাকা ঘুষ নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। গত এক মাসে তার( ওসির) বির্তকৃত ভূমিকা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে নির্বাচন স্থগিত ও বদলীর আদেশ কোনটাই ওসি শাখাওয়াত হোসেন মেনে নিতে পারছেন বলে অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ সভাপতিসহ স্থানীয়রা।
এদিকে মনপুরা থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন কাছে স্বীকার করে বলেন, বদলির কথা শুনে তার মনে কষ্ট লেগেছে। তাকে তদবির করে বদলী করা হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। অপরদিকে ছাত্রলীগ সভাপতি ও যুবলীগ সম্পাদকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি। ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী তার আত্মীয় নন। তার পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন না বলেও দাবি করেন। অপরদিকে উপজেলা যুবলীগ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির জানান, ১৬ এপ্রিল শুক্রবার তার বাড়ির পাশের একটি দোকান ঘরকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধের বিষয় নিয়ে কথা বলতে থানায় যেতেই ওসি তেড়ে আসেন। পিস্তল ও বন্দুক নিয়ে গুলি করতে তেড়ে আসেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের গালিগালাজ করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতি দেখে তাজ্জ্বব বনে যান উপস্থিত এস.আই.গনসহ স্টাফরা। অবস্থার বেগতিক দেখে মনিরুজ্জামান দ্রুত থানা ত্যাগ করেন। এর এক দিন পর রোববার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ সামসুদ্দিন সাগর বাড়ির পাশে জমির বিরোধে দু’পক্ষের সংঘাতের বিষয় নিয়ে থানায় প্রবেশ করতে ওসির সঙ্গে দেখা। সালাম দিতেই ওসি ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে গারদে আটকে রাখেন সাগরকে। এমন পরিস্থিতি দেখে অন্যান্য স্টাফরা ছুটে এসে সাগরকে উদ্ধার করেন। এই ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী জানান, মনপুরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এখানে অনেকেই এসে বেশি দিন থাকতে চান না। অথচ ওসি শাখাওয়াত ইউপি নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বদলী হওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না। এর পেছনে কোন কারণ থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।