মোংলা প্রতিনিধি:
দেশজুড়ে বইছে তীব্র দাবদাহ। ঘোষনা করা হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতি সপ্তাহের জন্য বন্ধ। প্রচন্ড গরমে ঘরে-বাইরে অতিষ্ঠ মানুষ। অথচ এই যখন পরিস্থিতি, সেই ত্রাহি অবস্থার মধ্যে থোড়াই কেয়ার ভ্রমন পিপাসু মানুষের। বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভবন সুন্দরবন দেখতে ছুটে এসেছেন তারা। এতে সামিল হয়েছেন বিদেশি পর্যটকরাও।
সুন্দরবনের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটন স্পট করমজলে ঠাসা ছিল দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। তাদের পদচারনায় অবাক হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও। রবিবার (২১ এপ্রিল) এই করমজলে পর্যটকের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সেখানকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও করমজল পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ভেবেছিলাম তীব্র গরমে হয়তো পর্যটক কম আসবে। কিন্তু সেই ভাবনায় গরমের আগুন ঢেলে অবাক করেছে। রবিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেশ পর্যটক এসেছেন। এদিন সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন জাপানি পর্যটকরাও। সবমিলে ৫০০’র বেশি পর্যটটে মুখরিত এই করমজল।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক যে সৌন্দর্য, তা আসলে পৃথিবীর কোথাও নাই। তাইতো ভ্রমন পিপাসু পর্যপকরা একঘেয়েমি ক্লান্ত কর্মময় সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন দেখতে ছুটে আসেন। এদিন বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জে অনুষ্ঠিত হরিচাঁদ ঠাকুরের শুভ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত বারুণী নোৎসব, ধর্মীয় মতুয়া সম্মেলন ও সাধুর মেলায় আসা ভক্তরা করমজলে বেশি এসেছেন বলেও জানান তিনি।
সাধুর মেলা দেখতে আসা গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার মথুয়া সম্প্রদায়ের এক দর্শনার্থী সুব্রত দেবনাথ (৩৪) বলেন, ‘মেলা ও বারুনী ¯œনোৎসব উপভোগ করতে এসেছি। তবে পাশেই যেহেতু সুন্দরবন, তাই আর আসা হবে কিনা এ জন্য সুন্দরবনকে এক নজর দেখতে এসেছি। গরম কোন ব্যাপার না’। তার মতো অনেকেই এসেছেন সুন্দরবনের করমজলে।
জানা যায়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এ ম্যানগ্রোভ বনে গাঢ় সবুজের সমারোহ। শুধু সবুজ আর সবুজের মেলা। হরেক রকমের জীব-জন্তু, পাখ-পাখালি, আর কীট পতঙ্গ। বঙ্গোপসাগর থেকে ছুটে আসা জলভেজা লাবণাক্ত বাতাস। জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ। প্রাকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্ঠি। তাই পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের আকর্ষণ তাই দুর্ণিবার।