নিজস্ব প্রতিনিধি:
তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামী সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুমে টানা ৯০ দিন বন্ধ থাকার পর জেলেরা আবারও মাছ ধরতে এবং পর্যটকরা বন ভ্রমণে যেতে পারবেন। তবে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েই জীবিকার সন্ধানে নতুন যাত্রা শুরু করছেন জেলেরা।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলে আহমদ আলী জানান, টানা তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ থাকায় পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। দোকানদারদের কাছ থেকে ধার করতে হয়েছে, এমনকি সন্তানদের পড়াশোনাও ব্যাহত হয়েছে। তিনি বলেন, “এখন বন খুলে দেওয়ায় আশা ফিরে পেয়েছি। মাছ ও কাঁকড়া ধরে ঋণ শোধ করতে পারব, সংসার চালাতে পারব।”
তবে আহমদ আলী অভিযোগ করেন, নিষিদ্ধ সময়ে কিছু জেলে অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করে বিষ দিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরেছে। এতে বৈধভাবে জীবিকা নির্বাহকারীদের ক্ষতি হয়েছে।
একই এলাকার জেলে মিজানুর রহমান বলেন, “পাস বন্ধ থাকায় সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসার খরচ চালাতে আমরা চরম সংকটে পড়েছিলাম। আজ আবার বৈধ পাস হাতে পেয়ে খুশি মনে সুন্দরবনে যাচ্ছি।”
জেলে রফিকুল ইসলাম জানান, বৈধভাবে মাছ ধরতে পারলেও জলদস্যুদের আতঙ্ক এখনও রয়ে গেছে। তিনি সরকারের কাছে আরও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
শ্যামনগরের জেলে হোসেন গাজী বলেন, “এই তিন মাস কোনো আয়ের পথ ছিল না। এবার মাছ-কাঁকড়া ধরেই দোকানদারদের ধার শোধ করার পরিকল্পনা করেছি।”
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. ফজলুল হক বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে বন বন্ধ রাখা হয়। এখন থেকে জেলেরা বৈধ পাস নিয়ে নির্বিঘ্নে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও রিভার পুলিশ যৌথভাবে নিরাপত্তা তদারকি করছে।
এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমস্যায় পড়লে সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।